খোলা বাজার২৪, শনিবার , ১৭ অক্টোবর ২০১৫: ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) “আঞ্চলিক যোগাযোগ: বাংলাদেশের সমস্যা ও সম্ভাবনা” বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এ সেমিনার অনুষ্ঠিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রিয়ার এ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত হরি কুমার শ্রেষ্ঠা। এতে স্বাগত বক্তব্যে দেন ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের বৃহত্তম ব্যবসায়িক সহযোগী দেশ। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভূটানের মধ্যকার ব্যবসায়িক সম্পর্ক উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাণিজ্যিক অবকাঠোমার অপার্যপ্ততা, ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বিষয়ক সমস্যা এং আঞ্চালিক সহযোগিতার অভাবে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে কাঙ্খিত মাত্রায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হয়নি। তিনি আরও বলেন, ডব্লিউটিও টিএফএ চুক্তির পাশপাশি প্রস্তাবিত মটর ভিহাইকেল এগ্রিমেন্টটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, বিদ্যমান নন-ট্যারিফ ইস্যু, ট্রান্সফার ফি, সারচার্জ এবং ট্র্রান্সপোর্ট বিষয়ক জটিলতাসমূহ নিরসনের জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত হরি কুমার শ্রেষ্ঠা বলেন, প্রস্তাবিত বিবি আইএম প্রকল্পের সফল বস্তাবায়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাজনৈতিক স্বদিইচ্ছা একান্তভাবে অপরিহার্য। তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে মংলাবন্দরের সাথে নেপালের সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হলেও অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে এ ক্ষেত্রে কাঙ্খিত উন্নয়ন অর্জিত হয়নি। নির্ধারিত আলোচনায় আব্দুল মোনেম লিমিটেড-এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাইনুদ্দিন মোনেম, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই)-এর সিনিয়র ইকোনোমিস্ট ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এবং ডিসিসিআই সমন্বয়কারী পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান অংশগ্রহণ করেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিড)-এর অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য সহায়ক আঞ্চলিক যোগাযোগ অত্যন্ত প্রয়োজন। তিনি আরোও বলেন, প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী পাশ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আলোচনার মাধ্যমে এসওপি, সারচার্জ সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়গুলো সুরাহা করা প্রয়োজন। তিনি আরোও বলেন, সংশ্লিষ্ট চারদেশের অবকাঠামোখাতের যথাযথ উন্নয়নের উপর স্বাক্ষরিত চুক্তির সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি (কমার্স) বিজয় সিলভারেজ প্রস্তাবিত চুক্তিটির সফলতা নির্ভর করে এর অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা ও এবং পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে তুলনামূলক সহজ ট্যারিফ কাঠামোর উপর। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের রেলওয়ে এ্যাডভাইজর দিবেনজন রয় বলেন, বিবি আইএম সম্পর্কে চারদেশের জনগনের সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আগামী ১৪ নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে একটি র্যালী আয়োজন করা হবে, যেটি ভারতের ভুবেনম্বর থেকে শুরু হবে। তিনি বলেন, এ চুক্তির আওতায় কার্গো কন্টেনাইরের ক্ষেত্রে ডিজিটাল ট্রাফিকিং সিস্টেম চালু করা হবে, যার মাধ্যমে যানবাহনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। ভূটান দূতাবাসের কাউন্সিল (ট্রেড) ইয়নটেন জিয়ামশো বলেন, প্রস্তাবিত রুটের ভূটান অংশে অবস্থিত ডাওকি ব্রিজটি সংষ্কারের লক্ষ্যে ভূটান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআই সাবেক সভাপতি এম এইচ রহমান, বেনজীর আহমেদ, পরিচালক আব্দস সালাম, সাবেক সহ-সভাপতি এম এস সেকিল চৌধুরী, সাবেক পরিচালক আহমেদ হোসেন মজুমদার, মোঃ শরফুদ্দিন, আহবায়ক এম এস সিদ্দীকি এবং রিয়াদ হোসেন অংশগ্রহণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. শোয়েব চৌধুরী, পরিচালক আব্দুস সালাম, খ. আতিক-ই-রাব্বানী, এফসিএ, মোক্তার হোসেন চৌধুরী, সাবেক সহ-সভাপতি হায়দার আহমদ খান, সাবেক সহ-সভাপতি এম আবু হোরায়রা, আবসার করিম চৌধুরী, হোসেন এ সিকদার এবং ডিসিসিআই মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির।