খোলা বাজার২৪, রবিবার , ১৮ অক্টোবর ২০১৫ : চট্টগ্রাম নগরীর আবাসিক এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে জেএমবি সদস্যরা অস্ত্র চালানোসহ বিভিন্ন জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেন বলে গ্রেপ্তার একজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে জানিয়েছে পুলিশ। নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর-দক্ষিণ) বাবুল আক্তার বলেন, নগরীর যেসব এলাকায় ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দেওয়া হয় জঙ্গিরা সেসব এলাকা বেছে নেন। “কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটলে এসব বাসায় কী হচ্ছে তা জানা সম্ভব হয় না,” শুক্রবার ভোরে টাঙ্গাইলের নাগরপুর থেকে গ্রেপ্তার জেএমবি সদস্য মিনহাজুল ইসলাম ওরফে সজীবকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, জেএমবিতে যোগে দেওয়ার পর নগরীর বায়েজিদ থানার টেক্সটাইল এলাকার একটি কলোনিতে ভাড়া বাসায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন মিনহাজ। এর আগে গত ৫ অক্টোবর কর্ণফুলী থানার খোয়াজনগর এলাকার একটি বাসা থেকে জেএমবির ‘সামরিক শাখার কমান্ডার’ তৌফিকুল ইসলাম ওরফে জাবেদ ওরফে রানাসহ পাঁচজনকে নয়টি হ্যান্ডগ্রেনেড, একটি পিস্তল, ১২০ রাউন্ড গুলি, বোমা ও অস্ত্র তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। সেদিন নগরীর মাদরবাড়ি ও অক্সিজেন এলাকা থেকে জেএমবি’র সেকেন্ড-ইন-কমান্ডার বুলবুল আহমেদ সরকার ওরফে আপেল ওরফে ফুয়াদ ওরফে মেহেদী ওরফে রকিসহ (২৬) সংগঠনটির অন্য তিন সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বলেন, চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার মধ্যম সোনাপাড়ার তোফাজ্জল হোসেন দুলালের ছেলে মিনহাজুল আগে কাঁচপুর ব্রিজ এলাকায় একটি ব্য়লার কারখানায় চাকরি করতেন। গত বছরের শেষ দিকে দুঃসম্পর্কের মামা হারুনুর রশিদ ওরফে রুবেল ওরফে সৌরভের মাধ্যমে তিনি জেএমবিতে আসেন। এরপর তাকে চট্টগ্রাম নগরীতে নিয়ে আসা হয় এবং বায়েজিদ থানার টেক্সটাইল এলাকার ওই বাসায় অস্ত্র চালানো, গ্রেনেড ছোঁড়াসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। “জেএমবি’র আঞ্চলিক কমান্ডার ফারদীন, সেকেন্ড-ইন-কমান্ড বুলবুল আহমেদসহ কয়েকজন মিলে তাকে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিতেন।” প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর মিনহাজুল ‘ফিল্ড অপারেশন’ শাখার সদস্য হন বলে জানান বাবুল আক্তার। মিনহাজের বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর মিনহাজুল পুনরায় মিরসরাই উপজেলায় একটি রড তৈরির প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের কাজ নিলেও কিছুদিন পর জেএমবি সদস্য বুলবুল আহমেদ ওরফে মেহেদী ওরফে ফুয়াদের পরামর্শে কাজ ছেড়ে নগরীতে আসেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে মিনহাজুল নগরীতে তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ভাড়া নেওয়া বেশ কয়েকটি বাসায় ঠিকানা দিয়েছেন বলে জানান তিনি। গোয়েন্দা কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বলেন, “বাড়িওয়ালারা ঘরভাড়া দিলেও ভাড়াটিয়ারা কী করে বা তাদের বিস্তারিত পরিচয় নিশ্চিত হয় না।” ভাড়াটিয়াদের বিস্তারিত পরিচয় জেনে ঘরভাড়া দেওয়ার জন্য বাড়িওয়ালাদের পরামর্শ দেন তিনি।