খোলা বাজার২৪, রবিবার , ১৮ অক্টোবর ২০১৫ : তোফাজ্জল হোসেনঃ- মেঘনার তীরে বেড়ী বাধে বেড়াতে গিয়ে দুস্কৃতকারীদের হাতে অপহৃত হয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে নরসিংদী সদর মডেল থানাধীন মাধবদী পুলিশ ফাঁড়ির নিকটবর্তী এক স্কুলের দশম শ্রেণীর দুই ছাত্রী। ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে অনেক নাটকীয় ভাব দেখিয়ে ঘটনার একদিন পর গতকাল সন্ধার পর গণধর্ষণের সত্যতা স্বীকার করল পুলিশ।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নরসিংদী সদর উপজেলার বালাপুরের কাছে মেঘনা নদীর তীরে এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে। রাতেই ঘটনা প্রকাশ হয়ে যাবার পর প্রভাবশালী মহলের চাপে পুলিশ ঘটনাটি ধামা-চাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ এবং ভিকটিম জানায়, গত শুক্রবার বিকেলে মাধবদীর দশম শ্রেণীর দুই ছাত্রী পাইকারচর ইউনিয়নের মেঘনা বাজার বেড়ী বাঁধ এলাকায় ভ্রমণে যায়। তাদের সাথে ছিল পার্শ্ববতী নগর ডৌকাদি এলাকার মোঃ সবুজ মিয়া, সুমন মিয়া, মাহবুব আলম ও আলম আমিন নামে আরো ৪ যুবক।
বেড়ী বাধ এলাকায় ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে এলে বালাপুরের চরের বোরহান উদ্দিনের পুত্র সাইফুল, কুদ্দুস আলীর পুত্র আলতাফ, সামসুউদ্দিনের পুত্র আজমলসহ একদল দুস্কৃকতারীরা ছাত্রীদের সংগে থাকা ৪ যুবকে মারপিট করে তাদের সংগে থাকা মোবাইল ফোন, নগদ টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে অস্ত্রের মুখে ছাত্রী দু’জনকে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ছাত্রী দুটির সাথে থাকা ৪ জন যুবক প্রাণে বেঁচে গিয়ে মাধবদীতে ফিরে এসে ঘটনাটি মেয়ের স্বজনদেরকে অবহিত করে। খবর পেয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা ঘটনাস্থলে পৌছে এলাকাবাসীকে জানায়। পরে তারা এলাকাবাসীকে সংঘবদ্ধ করে পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শী ৪ যুবককে আটক করে মেঘনা বাজার ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।
পরে পুলিশ ছাত্রী দুটিকে উদ্ধারের জন্য তৎপরতা শুরু করে। অপহরণকারীরা ততক্ষণে মেয়ে দুটিকে গণধর্ষণ করে মেঘনা তীরবর্তী মহিষাশুড়া ইউনিয়নের বথুয়াদী গ্রামে নিয়ে লুকিয়ে রাখে। এ ঘটনা জানাজানি হবার পর প্রভাবশালী মহলের মধ্যস্থতায় পুলিশ ছাত্রী দুটিকে মহিষাশুড়ার বথুয়াদী ও খীলগাঁও এলাকা থেকে উদ্ধার করে স্বজনদের হাতে তোলে দেয়।
এসময় আটককৃত যুবকদের অভিভাবক ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শী ৪ যুবককে রাতেই ফাঁড়ি থেকে ছেড়ে দেয়।
এদিকে মেঘনা ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত দারোগা মনজু সাংবাদিকদের কাছে অপহরণের ঘটনা স্বীকার করে জানান, অপহরণকারী ধর্ষকদের নাম ঠিকানা ও পরিচয় জানতে পারলেও তাদেরকে গ্রেফতার করার সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু তাদেরকে পাওয়া যাচ্ছেনা। তবে এঘটনায় পুরো মাধবদী এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশের ভূূমিকা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।