Fri. Aug 15th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, রবিবার , ১৮ অক্টোবর ২০১৫ : রাজধানীতে রবিবার দুপুর থেকে রাস্তায় চরম পরিবহন 42সংকটে স্থবির হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে গণপরিবহন চলাচল না করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। রবিবার সকালে বাড়তি বাস ভাড়া আদায় করায় মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কয়েকজন বাসচালককে জরিমানা করা হলে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় শ্রমিকেরা। বাস স্টপেজগুলোতে শত শত যাত্রী অপেক্ষা করলেও মিলছে না কোনো গণপরিবহন। অনেকেই পাঁয়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ তিন-চারগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশা, ভ্যানে যাতায়াত করছেন। বাস চালক ও শ্রমিকেরা বলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কয়েকজন বাসচালক ও শ্রমিককে দণ্ড দেওয়ায় তারা বাস চালাচ্ছেন না। এদিকে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্লাহ বলেন, বাস ভাড়া নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটরা কয়েকজন চালককে জরিমানা করেছেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে শ্রমিকেরা সারা ঢাকায় বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা চেষ্ট করছি তাদেরকে বুঝিয়ে বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে। দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সদরঘাট বাস টার্মিনালে স্কাইলাইন, আজমেরী গ্লোরীর ১০-১২ টি বাস রয়েছে। কিন্তু কয়েকশ যাত্রী বাসের অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলেও বাসগুলো বাসস্ট্যান্ড ছাড়ছে না। এ বিষয়ে আজমেরী গ্লোরীর বাসচালক আক্কাস মিয়া বলেন, গ্যাসের দাম বাড়লেও অতিরিক্ত বাস ভাড়া দেন না যাত্রীরা, আবার স্টুডেন্ট গাড়িতে উঠলে আরও লোকসানে পড়তে হয় আমাদের। এ নিয়ে সকালে নাকি মিরপুরে ঝামেলা হয়েছে। তিনি বলেন, গুলিস্তান থেকে পুলিশ আমাদের পরিবহন শ্রমিক নেতাদের ধরে নিয়ে গেছে। পরে গুলিস্তানে কিছুটা ঝামেলা হয়েছে। আমরা এখন স্ট্রাইক করেছি, আমরা বাস চালাবো না। এদিকে বাস না পেয়ে পাঁয়ে হেটেই অনেক যাত্রীকে গুলিস্তান যাত্রা করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে রিকশা ও গরুর গাড়ীতে তিন থেকে চারগুন বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বিপরীতমুখী রাস্তা মোটামুটি ফাঁকা থাকলেও সদরঘাট থেকে গুলিস্তানগামী লেনটি ছিল পুরো স্থবির। বাস রেখে চালকরা চলে যাওয়ায় এ রাস্তায় শতশত বাস দাঁড়িয়ে আছে। এর ফাঁকে অসংখ্য প্রাইভেট গাড়ীও আটকে আছে। সুরিটোলা এলাকায় ভিক্টর পরিবহনের বাস চালক হাসান মিয়া বাসেই ঘুমাচ্ছিলেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের নেতারা আটক হবে, আমরা যথাযথ ভাড়া পাব না- এটা হতে পারে না। আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায়ই থাকবো। সদরঘাট থেকে গুলিস্তান আসা যাত্রী ফয়সাল আহমেদ বলেন, এভাবে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা ঠিক না। রাস্তায় এভাবে গাড়ী পরে থাকলে ঢাকা তো অচল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ছোট ভাইকে নিয়ে শাহবাগে হাসপাতালে যাবো। আমার মত আরো অনেকেই প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরোয়নি। তাই যারা এ ধরণের সমস্যা সৃষ্টি করছেন তাদের ভাবা উচিত মানুষের কি পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে ঘোড়ার গাড়ীর চালক ইকবাল বলেন, ৫০ টাকা করে সদরঘাট যাচ্ছি আজ। আমরা তো কারো কাছ থেকে জোর করে ভাড়া বেশি নিচ্ছি না। কারো প্রয়োজন হলে সে যাবে, না হলে নাই। বাস নাই, ৫০ টাকা কেন ১০০ টাকা দিয়াও অনেকে যাবে। অন্যদিকে গুলিস্তানে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নারায়নগঞ্জগামী হাজারো যাত্রী বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু কোন পরিবহন চলতে দেখা যায় নি। এছাড়া রাষ্ট্রপতির ভবন সংলগ্ন রাস্তায় চালক ছাড়া অসংখ্য বাস দাঁড়িয়ে থাকায় পুরো রাস্তাই স্থবির হয়ে পড়েছে। এদিকে মতিঝিল এলাকায় হাজারো যাত্রী বাসের অপেক্ষায় থাকলেও কোন বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি।

অন্যরকম