খোলা বাজার২৪, রবিবার , ১৮ অক্টোবর ২০১৫ : গ্যাস, বিদ্যুৎ, পরিবহন, মজুরি ও নিরাপত্তা ব্যয় বাড়তে থাকায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। আন্তর্জাতিক বাজারে পোশাকের মূল্য কমতে থাকায় এ সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) কারওয়ানবাজারে বিজিএমইএ ভবনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিজিএমএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মজুরি বৃদ্ধি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাতে গত এক বছরে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। কাঠামোগত সংস্কার, অগ্নি নিরাপত্তা ও প্রতিরোধ কার্যক্রম, এবং বৈদ্যুতিক সংস্কার বাবদও প্রতিটি কারখানাকে গড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। অথচ পোশাকের মূল্য পাল্লা দিয়ে কমছে। যুক্তরাষ্ট্রের অটেক্সা ও ইউরোপের ইউরোস্ট্যাটের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘চলতি বছরের জানুয়ারি-জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পোশাকের মূল্য কমেছে ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর ইউরোপে কমেছে ১ দশমিক ৪১ শতাংশ।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ক্রেতারা মূল্য না বাড়ালেও অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যানের সুপারিশ অনুযায়ী কারখানার সংস্কার কাজ করতে হচ্ছে। অন্যদিকে দুর্বল অবকাঠামো, গ্যাস-বিদ্যুৎ ও দক্ষ শ্রমিকের সংকট মোকাবেলা করে রপ্তানি কার্যকম চালাতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি ব্যাংকের অতিরিক্ত সুদ, বিভিন্ন দেশে ডলারের বিনিময় মূল্য হ্রাস দেশের তৈরি পোশাককে কঠিন সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সিদ্দিকুর রহমান মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘এ চুক্তির ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। স্বাক্ষরকারী ১২টি দেশের মধ্যে ভিয়েতনাম আমাদের প্রতিযোগী দেশ। তারা বিনাশুল্কে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি করতে পারবে। আর অতিরিক্ত শূল্ক দিয়ে পোশাক রপ্তানি করতে হবে আমাদেরকে। এই চুক্তিতে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে সরকারকে কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি। পোশাকখাতের সংকট উত্তরণে গ্যাসের দাম কমানোসহ সিঙ্গেল ডিজিটে ব্যাংক সুদ, ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানো এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন বলে মনে করেন বিজিএমইএ সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী, আনোয়ারুল আলম পারভেজ, বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, সহ-সভাপতি মইনুদ্দিন আহমেদ, এস এম মান্নান কচি, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসিরসহ অন্যান্য পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।