খোলা বাজার২৪, সোমবার , ১৯ অক্টোবর ২০১৫ : দুই বিদেশীকে হত্যার পর বর্তমানে ইতালী ও ফ্রান্সের নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশে কোনো সতর্কবার্তা নেই। অনাকাঙ্খিত ওই ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশীদের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইতালীর রাষ্ট্রদূত মারিও প্লামা এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফি ওবের দু’জনই এমন মন্তব্য করেছেন। সচিবালয়ে সোমবার বিকেলে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা এমন মন্তব্য করেন। সাংবাদিকদের এ সময় ইতালীর রাষ্ট্রদূত মারিও প্লামা বলেন, ‘তাভেলা সিজার হত্যাকাণ্ড খুবই দুঃখজনক। এরপরও অমি মনে করি, ইতালীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে আসা-যাওয়াতে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। আমরা কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করিনি। যে কেউ এ দেশে আসা-যাওয়া করতে পারবেন। কারণ ওই ঘটনার পর শেখ হাসিনার সরকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এটা শুধু ঢাকায় নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘তাভেলা সিজার হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তবে তদন্ত কার্যক্রম পুরোপুরি শেষ হতে আরও সময় লাগতে পারে। আমরা চাই, সঠিকভাবে তদন্ত হোক।’ এক প্রশ্নের জবাবে মারিও প্লামা বলেন, ‘ওই খুনের ঘটনায় আইএস জড়িত কি না— তা আমার জানা নাই। বাংলাদেশে আইএস রয়েছে বলে আমার মনে হয় না। আর বাংলাদেশ সরকারও বলেছে এখানে আইএস নেই। আমার মনে হয় ওই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।’ ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফি ওবের বলেন, ‘বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় আমাদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ভয় পাওয়ার মতো বিষয় এটি। পৃথিবীর সবখানেই এ ধরনের সন্ত্রাসীমূলক ঘটনা ঘটে থাকে। আমি সতর্ক থাকতে চেষ্টা করি। তবে এ জন্য বাংলাদেশে অবস্থিত ফ্রান্সের নাগরিকদের জন্য কোনো সতর্কবার্তা নেই।’ বৈঠক শেষে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘ইতালী ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মূলত ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এসেছিলেন। তারা চায় বাংলাদেশ বিমানের সঙ্গে আরও সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে। যদিও আগে থেকেই তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তারা গবেষণা করে দেখেছে, আমাদের অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের স্বল্পতা রয়েছে। বিশেষ করে যাত্রী পরিবহন। চাহিদা অনুযায়ী আমাদের আরও বিমান প্রয়োজন রয়েছে বলে তারা মনে করেন।’ তিনি বলেন, ‘‘এ জন্য তারা বিমান (ইতালী ও ফ্রান্সের যৌথমালিকানাধীন বিমান প্রস্তুতকারক কোম্পানি- এটিআর) সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছে। একই সঙ্গে এ খাতে তারা অর্থায়নও করতে আগ্রহী। ফ্রান্স সরকারের পক্ষে ‘সিকোফাস’ এবং ইতালীর সরকারের পক্ষে ‘সাসে’ নামক দুটি প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন করতে চায়।’’ মেনন বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি উদার গণতান্ত্রিক দেশ। জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার স্থান এখানে নেই। দুই বিদেশী হত্যার তদন্ত চলমান। ওই ঘটনার রহস্য উন্মোচন সময়ের ব্যাপার মাত্র।’ প্রসঙ্গত, ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় খুন হন ইতালীর নাগরিক তাভেলা সিজার। তার খুনের রেশ কাটতে না কাটতেই পাঁচ দিনের মাথায় রংপুরে খুন হন জাপানের নাগরিক কুনিও হোশি।