খোলা বাজার২৪, সোমবার , ১৯ অক্টোবর ২০১৫ : চট্টগ্রামে কুকুর লেলিয়ে শিক্ষার্থী হিমাদ্রী মজুমদার হিমু হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ১ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। ওইদিন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি উপস্থাপন করবেন। সোমবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ নুরুল ইসলামের আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। বাদী পক্ষের আইনজীবী অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “আজ পাঁচ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য বিষয়ে আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেছি। যুক্তি উপস্থাপন শেষে আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছি।” সোমবার আদালতে বিচারকের উদ্দেশে আইনজীবী অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “এ মামলা কোন সাধারণ হত্যাকাণ্ডের মামলা নয়। মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিরপরাধ হিমুর মৃত্যু হয়েছে। “এ মামলার দিকে পুরো সমাজ ও বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অপরাধীরা সাজা না পেলে আর কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা বা ভালো কোনো উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসবে না।” এর আগে গত ১৪ অক্টোবর আদালতে নিহত হিমুর মৃত্যুর আগে দেওয়া বক্তব্যের অডিও রেকর্ড আদালতে বাজিয়ে শোনানো হয়। রেকর্ড করা ওই বক্তব্যের লিখিত অনুলিপি ১ অক্টোবর আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ২০১২ সালের ২৭ এপ্রিল নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় শাহ সেলিম টিপুর বাড়ির ছাদ থেকে হিংস্র কুকুর লেলিয়ে ও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় শিক্ষার্থী হিমুকে। আহত অবস্থায় ২৬ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর ২৩ মে তার মৃত্যু হয়। হিমু খুনের ঘটনায় তার মামা শ্রীপ্রকাশ দাশ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর পুলিশ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এ মামলায় অভিযুক্ত পাঁচ আসামি হলেন- জাহিদুর রহমান শাওন, জুনায়েদ আহমেদ রিয়াদ, তার বাবা শাহ সেলিম টিপু, শাহাদাত হোসেন সাজু ও মাহবুব আলী ড্যানি। সোমবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামিনে থাকা দুই আসামি টিপু ও সাজু। মামলার অন্য তিন আসামি এখনও পলাতক। অভিযোগ গঠনের শুনানি চারবার পিছিয়ে গত বছরের ৩ ফেব্র“য়ারি অভিযোগপত্র দেওয়ার প্রায় দেড় বছর পর পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। ২০১৪ সালের ১৮ ফেব্র“য়ারি এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত বছরের ২১ জুলাই মামলাটির এক আসামির আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলায় ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। স্থগিতাদেশের অনুলিপি গত বছরের ৪ অগাস্ট চট্টগ্রাম আদালতে পৌঁছালে মামলাটির বিচার কাজ থেমে যায়। এরপর গত বছরের ৭ অগাস্ট ছয় মাসের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের করে উচ্চ আদালতের একই বেঞ্চ। ওই আদেশের অনুলিপি গত বছরের ১৮ অগাস্ট চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট আদালতে এসে পৌঁছায়। এরপর ২০১৪ সালের ২৭ অগাস্ট আবার মামলাটির শুনানি শুরু হয়। মামলায় ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর এ মামলার তথ্য ও যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়।