খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২১ অক্টোবর ২০১৫ : বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে কর্মরত প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবীকে ‘চার সপ্তাহের ছুটিতে’ পাঠাচ্ছে জাপান।
রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ডের পর টোকিওর পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা।
তাদের ছুটিতে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকায় জাইকার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটা সাময়িক প্রত্যাবর্তন।”
বর্তমানে বাংলাদেশে কর্মরত ৭০ জন স্বেচ্ছাসেবীর মধ্যে ৪৮ জনকে জাপানে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান।
গত ৩ অক্টোবর রংপুরে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা গুলি চালিয়ে হত্যা করে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে। তার ছয় দিন আগে ঢাকার কূটনীতিক এলাকা গুলশানে একইভাবে খুন হন ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা।
তিনি বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পর যারা বিপন্ন বোধ করেছিলেন তাদের সেসময়ই ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল এবং এখন তারা বসে বসে বিরক্তি বোধ করছিলেন। এ কারণেই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এই বছরের শুরুতে রাজনৈতিক সংঘাতের সময়ও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।
স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত জাইকার আরেকজন কর্মকর্তা জানান, ৪৮ জনের মধ্যে ৩১ জনকে মঙ্গলবার ছুটিতে পাঠানো হয় এবং বাকিদের ছুটি শুরু হবে বুধবার থেকে।
এটাকে বাংলাদেশ থেকে জাপানি নাগরিকদের ‘সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ’ মনে করার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“তাদের জন্য ভাড়া নেওয়া বাড়িগুলো কিন্তু বুঝিয়ে দিইনি। সেখানে তাদের সবকিছুই রয়েছে। রয়েছে সব ফার্নিচারও।”
ছুটিতে পাঠানো কর্মীদের বেশিরভাগই রংপুর অঞ্চলের বলেও জানান তিনি।
জাইকার ওই দুজন কর্মকর্তাই জানান, সবাইকে গাড়ি দেওয়ার মতো অবস্থা থাকলে তাদের ছুটিতে পাঠাতে হত না।
“আমাদের এত গাড়ি দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। আর স্বেচ্ছাসেবীদের বিলাসিতা করার কোনো সুযোগ নেই। কেননা তারা কাজ করবেন গ্রামের মানুষের সঙ্গে। এটা তাদের কাজের অংশ,” বলেন একজন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দাতা দেশ জাপান ১৯৭৩ সাল থেকে স্বেচ্ছাসেবী পাঠিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত ১২শ’র বেশি স্বেচ্ছাসেবী বাংলাদেশে কাজ করে গেছে। তারা স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পরিবেশসহ উন্নয়নের প্রায় সব শাখাতেই কাজ করেছেন।
বাংলাদেশে জাইকার সহযোগিতা কর্মসূচিতে এই স্বেচ্ছাসেবীদের ‘সবচেয়ে উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় চালিকাশক্তি’ হিসেবে বিবেচনা করে জাইকা।
রংপুরে নিহত জাপানি হোশি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশে এসেছিলেন। জাপান প্রবাসী দুই বাংলাদেশির সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে এদেশে এসে একটি ঘাসের খামার করছিলেন তিনি।