খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২১ অক্টোবর ২০১৫ : খবরটি অবশ্যই চমকে দেয়ার মতো। কোন রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী নন, বিশ্বের ১৯৮টি দেশ ঘুরেছেন একজন সাধারণ মানুষ। তিনি নরওয়ের গান্নার গারফোরস। কোন রেকর্ড বইয়ে তার নাম লেখা না হলেও তিনিই হয়তো প্রথম ব্যক্তি যিনি এতগুলো দেশ ঘুরেছেন।
আরেকটি চমক হচ্ছে এতগুলো দেশ ঘুরেছেন তিনি চাকরি করে। তার অঢেল টাকা নেই, অলস সময়ও নেই তারপরও দেশ ভ্রমণের নেশা গারফোরসকে পেয়ে বসেছিল। নরওয়েজিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের এই মিডিয়া কনসালট্যান্ট সাপ্তাহিক ছুটি আর কোম্পানির ভ্যাকেশন লিভগুলোকে ব্যবহার করে অ্যান্টার্টিকা ছাড়া সবগুলো মহাদেশে পা রেখেছেন।
গারফোরস ১৭ বছর বয়সে প্রথম গ্রিস সফরে যান। পরিবার ছাড়া সফর করতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর বন্ধুদের সাথে ইউরোপের দেশগুলো ঘুরে দেখেন। তারপর পাড়ি জমান আমেরিকা, ল্যাটিন আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোয়। ২০১৩ সালে ৩৭ বছর বয়সে ১৯৮টি দেশ ঘোরা হয় তার।
চাকরি জীবনের দু’দিনের সাপ্তাহিক ছুটি কাজে লাগাতে প্লেনের টিকেট কেটে রাখতেন তিনি। একেক সপ্তায় একটি করে দেশ ঘোরা হয়ে যেত তার। পরের সপ্তাহে আরেকটি দেশ। কখনো টানা সাত দিনের ছুটি পেলে একসাথে কয়েকটি দেশ ঘুরেছেন এই পর্যটক। বেশিরভাগ সময় একাই ঘুরেছেন । মাঝে মাঝে বন্ধুদের সঙ্গ পেয়েছেন।
১৯৮ টি দেশ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গণনা করেছেন গারফোরস । জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশ এবং ভ্যাটিকান, ফিলিস্তিন গননা করেছেন। তবে অতিরিক্ত দেশ হিসেবে কসোভো, পশ্চিম সাহারা এবং তাইওয়ান গণনার মধ্যে ছিলো।
১৯৮ টি দেশে পরিদর্শন করার সময় গারফোরস মাত্র এক দিনের মধ্যে ১৯ টি দেশে ভ্রমন করেন। এই ১৯ টি দেশ হলো গ্রীস, বুলগেরিয়া, কসোভো, ম্যাসেডোনিয়া, সার্বিয়া, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, ক্রোয়েশিয়া, সেøাভেনিয়া, হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র, সেøাভাকিয়া, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড এবং লিচেনস্টাইন ছিল।
সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে গারফোরসের বই ‘১৯৮- মাই জার্নি টু এভরি কান্ট্রি ইন দা ওয়ার্ল্ড’। সেখানে তিনি জানিয়েছেন আরো চমকপ্রদ তথ্য। তিনি একদিনে পা রেখেছেন পাঁচটি মহাদেশে। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকায়। পাঁচ মহাদেশ ভ্রমণে ঘড়ির কাঁটায় সময় নিয়েছেন ২৮ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। কিন্তু প্রতিটি মহাদেশের টাইম জোন আলাদা হওয়ায় ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সময় লেগেছে একদিনই।
গারফোরস লিখেছেন, মানুষ তো সবসময় ভ্রমণের জন্য সময় পায় না। তবে শুধু কিছু পরিকল্পনা নিতে হবে। আমার কাছে অনেক টাকা ছিলো না। আমি ভ্রমণটা কে মনোনিবেশ এবং প্রাধ্যন্য দিয়েছি যার জন্য আমি ১৯৮ টা দেশে ভ্রমণ করতে পেরেছি।
তিনি এটা সম্ভব করেছেন কারণ বাড়ি থেকে বাহির হওয়ার সময়ে কোন স্যুটকেস নিয়ে বের হন নি। গারফোরসের মতে ভ্রমণের জন্য একটা হাত ব্যাগই যথেষ্ট। ইন্ডিপেনডেন্ট