Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২১ অক্টোবর ২০১৫ : ডি স্পিন ঘর বাজান দলটির এই নামের সঙ্গেই সেঁটে 73আছে প্রতিকূলতা জয় করে টিকে থাকার গল্পটা। দেশটির পূর্বাঞ্চলের হিন্দুকুশ পর্বতের বরফাচ্ছন্ন পরিবেশে টিকে থাকা বাজপাখিরই আফগান নাম বাজান। টিকে থাকার গল্পে অল্প সময়ে সাফল্য পাওয়ার অংশটা যোগ করে নিয়েছে দলটি। এবার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপেও তারা খেলতে এসেছে শিরোপা জয়ের বড় স্বপ্ন নিয়ে। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বুধবার ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে স্বপ্ন পূরণের মিশন শুরু করবে বাজান। আগের দিন চট্টগ্রামের পুলিশ লাইনের মাঠে অনুশীলনের ফাঁকে দলটির অধিনায়ক গোলাম হযরত নিয়াজি ও চিকিৎসক বেহরাম সিদ্দিকির কাছ থেকে পাওয়া গেল বাজান ও আফগান ফুটবলের বর্তমান হাল-হকিকত। আটটি দল, ছয় ভেন্যুতে খেলা, এর মধ্যে একটি ভেন্যু মানসম্পন্ন, বাকিগুলোর অবস্থা ভালো নয়-আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে জানালেন সিদ্দিকি। গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া দেশটি ফুটবলে বড় স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সিদ্দিকির বিশ্বাস, মতবিরোধের অবসান ঘটিয়ে ফুটবলই একদিন দেশটির প্রদেশগুলোকে এক সুঁতোয় গাথবে। এমন দৃঢ় বিশ্বাসের কারণ হিসেবে সিদ্দিকি জানালেন, “ভলিবলের ম্যাচে কিছু আক্রমণ হয়েছে কিন্তু ফুটবল মাঠে এখনও আত্মঘাতী আক্রমণ বা এ জাতীয় কিছু হয়নি। কাবুলের পরিস্থিতি নিরাপদ।” পদে পদে যে জনপদে বিপদ, মৃত্যুর চোখ রাঙানি, সেখানে ফুটবলের এমন পাপড়ি মেলে ধরার গল্পটা সিদ্দিকি বলতেই থাকেন, “সরকার ফুটবলকে খুব সহায়তা দিচ্ছে; ফুটবলের মানোন্নয়নে চেষ্টা করছে, যাতে ফুটবল দেশকে কিছু দিতে পারে; এক সুঁতোয় বাধতে পারে।” যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের মানুষ আগে থেকেই ক্রীড়াপ্রেমী; এই প্রেমের গভীরতা ২০১৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফুটবলের শিরোপা জয়ের পর আরও বেড়েছে বলে জানান সিদ্দিকি। প্রিমিয়ার লিগের আট দলের ফুটবলার বাছাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়ে মজার এক তথ্যও দিলেন সিদ্দিকি। আফগানিস্তানকে আটটি জোনে ভাগ করা হয়; এই আট জোনের বিভিন্ন ম্যাচ থেকে জুরিরা ফুটবলার বাছাই করেন মূল দলের জন্য! হাশেমি, নিয়াজিদের বাজানের জার্সি গায়ে তোলাও এভাবেই। বাজানের সাফল্যের দিকে তাকালে বাছাইয়ে ওই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ নেই। ২০১২ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রিমিয়ার লিগে খেলছে দলটি। ২০১৪ সালে রানার্সআপ এবং ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। সুসময়টা শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপেও টেনে নিতে উন্মুখ ক্লাবটি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলছে বাজান। শেষটা স্মরণীয় করে রাখতে চেষ্টার কমতি না রাখার পণ করে বাংলাদেশে আসার কথা জানালেন অধিনায়ক নিয়াজি। “প্রতিপক্ষ সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। তবে এটা জানি, প্রতিটি দলই তাদের দেশের চ্যাম্পিয়ন এবং আমরা শিরোপা জয়ের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টাই করব।” “দেশে দ্বন্দ্ব-হানাহানি চলছে কিন্তু আমি এ ধরণের কোনো সমস্যা বা আক্রমণের মুখোমুখি আজও হইনি। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি ভালো এবং আরও ভালোর দিকে যাচ্ছে। আশা করি, আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব এবং (নিজের) ফুটবল ক্যারিয়ারকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারব”, যোগ করেন ২০১০ সালে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে চট্টগ্রামেই খেলে যাওয়া সেন্টার ব্যক। একদিন দেশ সেরা ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন লালন করা নিয়াজি জানালেন, ভালোবাসার টানেই ফুটবলে এসেছেন তারা; প্রতিবন্ধকতা জিতে এগিয়ে নিতে চান আফগান ফুটবলকে।