খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর ২০১৫: আইন বিভাগে অধ্যয়নরত এক ছাত্রীকে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে মানিকগঞ্জে। ওই ছাত্রী চারদিন ধরে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে ধর্ষক আশিকুর রহমান সবুজ (৩৩) নামের এক ব্যবসায়ীকে। এ বিষয়ে বিস্তারিত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশের প্রথম সারির একটি জাতীয় দৈনিক। ওই ছাত্রী ঢাকার বনানীর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। গতকাল দুপুরে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে হাসপাতালে দেখতে যান। নির্যাতনের শিকার ছাত্রী মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানান, সে ঢাকার বনানী এলাকায় একটি ছাত্রীনিবাসে থেকে পড়াশোনা করছেন। সবুজ নামে এক ব্যবসায়ী তাকে বেশ কিছুদিন ধরে প্রেম প্রস্তাব ও উত্ত্যক্ত করে আসছিল। গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে ছাত্রীনিবাসের সামনে থেকে সবুজ তাকে জোর করে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায়। পরে ঢাকা শহরের নির্জন এলাকায় নিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পাশাপাশি শরীরের ওপর চালায় নির্যাতন। এসময় সবুজের গাড়িচালক তার মুঠোফোনে ধর্ষণ ও নির্যাতনের চিত্র ভিডিও করে। পরে বিকালের দিকে অনেকটা বিবস্ত্র অবস্থায় সবুজ তাকে ছাত্রীনিবাসের সামনে ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে আত্মীয়স্বজন খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী আরও জানান, প্রায় দুই মাস ধরে সবুজ তার বাবাকে ১০ লাখ টাকা চেয়ে হুমকি দিয়ে আসছিল। টাকা না দিলে মেয়েকে এসিড মারবে কিংবা তার ছোট ভাইকে হত্যা করবে বলেও হমকি দেয়। এ সমস্ত হুমকি মেয়ে এবং তার বাবার মোবাইলফোনে কিছু রেকর্ড করা আছে বলেও তিনি জানান। এ ঘটনায় গত সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জ ওয়্যারলেস গেট এলাকার ঈশান মোটর নামের পার্টসের দোকান থেকে সবুজকে আটক করেছে পুলিশ। ধর্ষক সবুজের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনা এলাকায়। এছাড়া, ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বাড়ি জেলা শহরে। গতকাল দুপুরে ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ধর্ষণ মামলায় আটক সবুজ মেয়েটির ওপর নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছে। রিমান্ড শেষে সবকিছু জানা যাবে। এদিকে গতকাল দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীকে দেখতে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে যান। এ সময় জেলা প্রশাসক হাসপাতালে ধর্ষিত ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করে তার সার্বিক খোঁজখবর নেন এবং মেয়েটি এবং তার পরিবারকে সর্বোচ্চ আইনি সহায়তার আশ্বাস দেন। জেলা প্রশাসক ব্যক্তিগতভাবে মেয়েটিকে আর্থিক সহযোগিতা করেন।