
পুলিশ জানিয়েছে, বোমা হামলায় ঘটনাস্থলেই সাজ্জাদ হোসেন নামে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়। তার বাড়ি ঢাকার লালবাগ এলাকায় এবং সে তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে সেখানে এসেছিল।আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদের চিকিৎসায় বহু মানুষ হাসপাতালে গিয়ে স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের বেশিরভাগই আশঙ্কামুক্ত।ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হোসেনি দালান চত্বরে বিভিন্ন জায়গায় হতাহতদের ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে আছে। পুলিশ ওই জায়গা এবং যেসব জায়গায় বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে সেই জায়গাগুলো নিরাপত্তা কর্ডন করে ঘিরে রেখেছে।পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির সদস্যরা সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ করছেন।হোসেনি দালান চত্বরে সিসিটিভির ফুটেজও পুলিশ সংগ্রহ করেছে বলে কর্মকর্তারা বলছেন।
স্থানীয় চকবাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুল হক জানিয়েছেন, তাজিয়া মিছিলের জন্য হোসেনি দালান চত্বরে ১ হাজারের বেশি শিয়া মুসলিম জড়ো হয়েছিলেন। তাদের মিছিল শুরু করার প্রস্তুতির সময়ই পর পর ৩টি বোমা বিস্ফোরিত হয়।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহজনক ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরিত হয়নি এমন আরো দুটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ উল্লেখ করেছে, উদ্ধার করা বোমাগুলো কালো স্কচ টেপ দিয়ে প্যাঁচানো ছিল। এ গুলো হাতে তৈরি গ্রেনেড বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।এই তাজিয়া মিছিলের সংগঠকদের অন্যতম একজন এম এম ফিরোজ হোসাইন বিবিসি বাংলাকে বলেন, আমরা শিয়া মুসলিমরা ৪০০ বছর ধরে ঢাকায় এই তাজিয়া মিছিলের আয়োজন করে আসছি। কখনো আমরা কোনো ধরনের হুমকি পাইনি এবং কখনো আমাদের ওপর কোনো হামলাও হয়নি।বাংলাদেশে সকলের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক এবং সমপ্রীতির পরিবেশ আমরা পেয়েছি। তিনি এই হামলাকে ন্যাক্কারজনক ঘটনা বলে বর্ণনা করেন।
ফিরোজ হোসাইন বলেছেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এই হামলা করা হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
এদিকে শনিবার ভোরে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তিনি বিবিসিকে জানান, তাজিয়া মিছিলের জন্য সেখানে পুলিশ, র্যাব এবং সাদা পোশাকে পুলিশের ব্যাপক নিরাপত্তা নেয়া হয়েছিল।
এমন নিরাপত্তার মধ্যে বোমা হামলাকারীরা তাজিয়া মিছিলে অংশ নেয়ার সাজ নিয়ে হোসেনি দালান কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তারা মনে করছেন।পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, এটি কোনো জঙ্গি হামলা নয়। দেশে যারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, তারাই পরিকল্পিতভাবে এই নাশকতা করেছে।