খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৫ : সিসি ক্যামেরার তথ্য বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের শিগগিরই গ্রেপ্তারের আশা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও। দুর্গাপূজা ও আশুরাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল জোরদার, এর অংশ হিসেবেহোসনি দালানে বসানো হয়েছিল কয়েকটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। যে সব স্থানে এসব ক্যামেরা বসানো হয়েছিল, তাতে বিস্ফোরণের চিত্র ধরে পড়ার কথা। আর বিস্ফোরণকারীরা ভেতরে ছিল বলে পুলিশেরও ধারণা। আশুরায় শনিবার ভোররাতে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় পরপর হোসনী দালানে তিনটি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এক কিশোর নিহত এবং অর্ধ শতাধিক আহত হন। পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের হোসনি দালানের ইমামবাড়া থেকে প্রতিবছর আশুরার তাজিয়া মিছিল বের হয়। এর ব্যবস্থাপনায় থাকে ‘হোসাইনী দালান ইমামবাড়া’। হোসনি দালান এলাকার পুরোটি ৩২টি সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়। ইমামবাড়া ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মীর জুলফিকার আলী জানান, তাদের পক্ষ থেকে এই এলাকায় প্রায় তিন বছর আগে ১৬টি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। তিন দিন আগে পুলিশ আরও ১৬টি ক্যামেরা লাগায়। “এসব ক্যামেরার প্রতিটিই সচল,” বলেন জুলফিকার। হোসনি দালান কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরাগুলো বসানো। ইমাম বাড়াসহ পুরো এলাকাটাই সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। কমপ্লেক্সে ঢুকে উত্তরের প্রধান ফটক দিয়ে ইমামবাড়ায় যেতে যে খালি চত্বর সেখানই রাত ২টার দিকে বিস্ফোরণ ঘটে। ওই স্থানে তখন মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল, ছিল কয়েক হাজার মানুষ। সেখানে তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে এবং দুটি অবিস্ফোরিত বোমা পাওয়া যায় বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। যেখানে বিস্ফোরণটি ঘটেছে, সে স্থানটি সিসি ক্যামেরার আওতায় বলে ইমামবাড়া ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সদস্য জানান। ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় শনিবার দুপুরে জানান, তারা সব ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। “ঘটনাস্থল ও আশেপাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, হাতবোমাগুলো বহনকারীরা মিছিলেই ছিল। বাইরে থেকে কারও ছুড়ে মারার সম্ভাবনা কম।” হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ। রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান বলেছিলেন, দুষ্কৃতীরা কমপ্লেক্সের ভেতরে অবস্থান করেই বোমাগুলো ফাটিয়েছে। হোসনি দালানের উত্তরে কবরস্থান, তার পরেই চারটি একতলা, ছয়তলা দুটি বাড়ি। দক্ষিণে পুকুর। পশ্চিমে ইমাবাড়ার ব্যবস্থাপনা কমিটির দোতলা ভবন। পূর্বদিকে খালি জায়গার পরে কিছু বাড়ি ঘর। হোসনি দালানের উত্তর দিকেই বোমা হামলাটি হয়েছে। সেদিকে বাড়িগুলো শিয়া সম্প্রদায়ের বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “এসব বাড়ির কোনো একটি থেকে বোমা মারার সম্ভাবনা খুবই কম। তারপরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” ইমামবাড়া কর্তৃপক্ষের এবং পুলিশের লাগানো মোট ৩২টি ক্যামেরার ফুটেজ এখন পুলিশের সঙ্গে র্যাবও বিশ্লেষণ করছে। পুলিশ ও র্যাব এর আগে বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করেছে। যুবলীগ নেতা জায়েদুল হক মিল্কির খুনের দৃশ্যও সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল।