খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৫ : আফগানিস্তান তাঁর কাছে ‘ক্রিকেটের সিন্ডারেলা’। মলিন বেশে লুকিয়ে থাকা এক রাজকন্যা। আর সেই লুকোনো রাজকন্যাকেই বের করে নিয়ে আসতে চান ইনজামাম-উল হক। ক্রিকেট ব্যাটটাকে জাদুর কাঠি বানিয়ে দেড় দশক ধরে মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন। এবার আরেক জাদু নিয়ে হাজির হয়েছেন ইনজি। কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই অনেকটাই বদলে দিয়েছেন আফগানিস্তান দলকে। সেই দলটাই তাদের ইতিহাসে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে। সেটিও জিম্বাবুয়েকে জিম্বাবুয়ের মাটিতে হারিয়ে! আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতে গেলে আফগান ক্রিকেট রূপকথায় চিরদিনের জন্য জড়িয়ে যাবে ইনজামামের নাম। হোক না জিম্বাবুয়ে এখন ক্ষয়িষ্ণু এক শক্তি, কিন্তু টেস্ট খেলুড়ে দেশ তো। ‘কোচ ইনজামামে’রও জন্যও প্রথম অ্যাসাইনমেন্টের সিরিজ জয়ও হবে বড় অর্জন, সেটিও কিন্তু ডেভ হোয়াটমোরের মতো কোচের সঙ্গে টক্কর দিয়ে। কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম কোনো জাতীয় দলের পুরো দায়িত্ব নিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক। সেটিও মাত্র ২৫ দিনের জন্য! জিম্বাবুয়ে সফরটা শেষ হলেই আফগানিস্তানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ ‘ইনজি’র। অবশ্য আফগানিস্তান তাঁকে ছাড়লে তো! চতুর্থ ওয়ানডে পর্যন্ত সিরিজটা ২-২ সমতায়। আজকের ম্যাচেও ভালো অবস্থানে আফগানরা। জিম্বাবুয়ের সামনে ছুড়ে দিয়েছে ২৪৬ রানের লক্ষ্য। ১৬ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৫ উইকেটে ৫৯। এর আগে বিভিন্ন দলে টুকটাক কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা ছিল। তবে সেটা কোচিংয়ের বায়োডাটাতে ঠিক ‘ভারিক্কি’ ভাব এনে দেয়নি। নিষিদ্ধ ইন্ডিয়ান সুপার লিগে হায়দরাবাদ হিরোজের কোচ, কিংবা ২০১৩ ভারত সফরের আগে কিছুদিন পাকিস্তানের ব্যাটিং কোচ—এই পরিচয়গুলো ইনজি নিজেও দেবেন বলে মনে হয় না। ক্রিকেটের পার্শ্বচরিত্র নয়, ইনজি যে সব সময়ই চেয়েছেন মঞ্চের কেন্দ্রে থাকতে। আফগানিস্তানের দায়িত্বটা তাই ইনজামামের নিজের জন্যও ছিল বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণের চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জটাকে কী দারুণভাবেই না সামলে নিলেন এই ৪৫ বছর বয়সী! দুবার পিছিয়ে পড়েও দুবারই ফিরে আসা শুধু আফগানদের নয়, ইনজির লড়াকু মানসিকতারও প্রতিচ্ছবি। নিজের ক্যারিয়ারে অনেক প্রতিকূলতা পাড়ি দেওয়ার অভিজ্ঞতাটাই হয়তো শিষ্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছেন ‘মুলতানের সুলতান’। ইনজির সঙ্গে তাদের সম্পর্কটা এখানেই শেষ না হলেই ভালো। যে সিনডারেলার গল্প শুনিয়েছিলেন, সেটাকে সত্যিকারের রূপকথা বানালেই না বোঝা যাবে ইনজির আসল জাদু