গত চারশ বছর ধরে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে মহররমে আশুরা অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়ে আসছে। শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতকারীরা ন্যাক্কারজনক বোমা হামলার মধ্য দিয়ে শত-শত বছরের ধর্মীয় সম্প্রীতির উপর চরম আঘাত হেনেছে। এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা ৬১ হিজরিতে কারবালার প্রান্তরে প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এর সঙ্গে ঘটেছিল। আর আজ বাংলাদেশের ঐতিহাসিক হোসনি দালানের ইমামবাড়ায় ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো।
আজ রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “হোসেনী দালানে বোমা হামলা, বিদেশী হত্যা, পুলিশ হত্যা, মন্দিরে হামলার প্রতিবাদে” বাংলাদেশ সাধারণ শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে নাগরিক মানববন্ধন কর্মসূচীতে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত বক্তব্য রাখছিলেন। সংগঠনের সভাপতি মোঃ আরমান হোসেন পলাশের সভাপতিত্বে নাগরিক মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জিনাফ সভাপতি লায়ন মিয়া মোঃ আনোয়ার, বন্ধু দলের সভপতি শরীফ মোস্তফাজামান লিটু, মানবাধিকার সংগঠনের নেতা কে.এম রকিবুল ইসলাম রিপন, ন্যাপের নগর সদস্য সচিব মোঃ শহীদুুন্নবী ডাবলু, এনডিপির দপ্তর সম্পাদক মোঃ মুছা, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম, সদস্য সচিব মোঃ নাজমুল হোসেন, মোঃ মুন্না, মোঃ অপু, মোঃ শহীদ, মোঃ সবুজ, মোঃ জালাল প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া বলেন, রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসনি দালান ইমামবাড়াতে ১০ মহররম পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলা, হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশে শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে বোমা হামলা সরকারের চরম ব্যর্থতারই বহিঃপ্রকাশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চারণভূমি হলো বাংলাদেশ। এখানে সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু বলে কোন বিভাজন নেই, এখানে শিয়া-সুন্নী বলে কোন বিভাজন নাই, বিভাজন থাকতে পারে না। তিনি সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি বিনষ্টকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশের সকল রাজনৈতিক শক্তি ও জনগনের সম্বিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে সরকারকে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করে বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধিদের খুজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, আশুরা উপলক্ষে হোসনি দালানে তাজিয়া মিছিলে হামলা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিনত করার ষড়যন্ত্রেরই অংশ। আন্তর্জাতিক ও আভ্যন্তরিন ষড়যন্ত্রকারীরা যারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিনত করে সুবিধা ভোগ করতে চায় তারাই একের পর এক ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটাচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ আরমান হোসেন পলাশ বলেন, শাসকশ্রেনীর দলগুলোর হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার অপরাজনীতির ফলেই সারা দেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপর হামলা হচ্ছে। এদেশের সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির হাজার বছরের ঐতহ্যকে যারা বিনষ্ট করতে চায় দেশ-রাষ্ট্র-জনগনের শত্রু।