খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৫: ভোক্তাদের কাছ থেকে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট নেওয়ার পরও পরিশোধ না হওয়ার অভিযোগ পুরনো। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সচেতনতামূলক প্রচারণার পাশাপাশি এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ হৈ চৈ হচ্ছে।
এরকম অবস্থার মধ্যেই রোববার ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানাল, ঢাকার শপিংমলগুলোর বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান ভ্যাট পরিশোধ করছে না।
গত ২১ অক্টোবর নিশান ইশতিয়াক নামে এক ভোক্তা একটি কফি শপের ভ্যাট জালিয়াতি নিয়ে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, বন্ধুদের নিয়ে ওই কফি শপে খাওয়ার পর তাদের ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নম্বর সম্বলিত বিল ধরিয়ে দেওয়া হলেও আদতে ওই নম্বরের বিপরীতে কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
‘ভ্যাট চেকার’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ দিয়ে তারা জালিয়াতির বিষয়টি উদঘাটন করেন বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন নিশান।
গত কয়েকদিন এরকম অহরহ ঘটনা সোশাল মিডিয়ায় দেখা গেছে, যাতে নামিদামি অনেক প্রতিষ্ঠানের নামে অভিযোগ করেছেন ভোক্তারা।
রোববার ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের গোয়েন্দারা মাঠে অভিযান চালিয়ে ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে।
এতে বলা হয়, ঢাকার বিভিন্ন বড় বড় শপিংমলে জরিপকালে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন পাওয়া যায়নি। এসব ক্ষেত্রে যথাযথভাবে ভ্যাট পরিশোধ হচ্ছে না।
গত ৮ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর ঢাকার তেজগাঁও, মগবাজার, দয়াগঞ্জ মোড়, পোস্তগোলাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় অভিযান চলায় ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
অভিযানকালে সিমেন্ট, ফার্নিচার, থার্মোসেটিং, মোল্ডিং কম্পাউন্ড পাউডার, এইচডিপি কয়েল পাইপ, আইসক্রিম, সিলিং ফ্যান ও সাইকেলবাহী পরিবহনসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মোট নয়টি গাড়ি আটক করা হয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে।
এছাড়া কিছু প্রতিষ্ঠান ভ্যাট চালান ছাড়াই অথবা একই ভ্যাট চালান বার বার ব্যবহার করে পণ্য সরবরাহ করছে বলেও জানিয়েছে গোয়েন্দারা।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করছেন তারা।
মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম একটি খাত। ভ্যাট ফাঁকি রোধে সম্প্রতি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবি আর। ভ্যাট ফাঁকি খতিয়ে দেখতে ‘ভ্যাট চেকার’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপসও রয়েছে, যা দিয়ে মুহূর্তে এনবি আর থেকে ভ্যাট চালানের তথ্য সংগ্রহ করে যায়।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিরীক্ষা করে ১৩৫ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা উদঘাটন করা হয়েছে।