খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৫: গাইবান্ধার সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের ছোড়া গুলিতে আহত শিশু শাহাদত হোসেন সৌরভ চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পর তার পরিবারের নিরাপত্তায় দুই গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার বেলা সোয়া ১টায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের দহবন্দ ইউনিয়নের গোপালচরণ গ্রামের বাড়ি ফেরে সৌরভ।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি ইসরাইল হোসেন বলেন, “সৌরভ ও তার পরিববারের সদস্যরা ফিরে আসার পর থেকেই পুলিশ সুপারের নির্দেশে বাড়ি পাহারার জন্য দুজন চৌকিদার নিয়োগ করা করা হয়েছে।
“সৌরভের পরিববার যতদিন নিরাপত্ত চাইবে, ততদিন স্থানীয় দুজন চৌকিদার বাড়ি পাহারা দেবেন।”
পাশাপাশি সৌরভের বাড়ি ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি পুলিশের নজরদারি থাকবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
বাড়িতে ফেরার আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের কাছে সাংসদ লিটনের পক্ষ থেকে ‘নির্যাতনের আশঙ্কার’ কথা জানায় সৌরভ ও তার বাবা-মা।
২৪ দিনের চিকিৎসা শেষে সোমবার সকালে হাসপাতাল ছাড়ার আগে কর্তৃপক্ষ সৌরভকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে।
সেখানে সৌরভ বলে, “অনেকদিন বাঁচতে চাই। কিন্তু ভয় হয়, এমপি লিটন ও তার লোকজন আমাক বাঁচতে দেবে তো? আমার পরিবারের ওপর নির্যাতন করবে না তো?”
নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা প্রকাশ পায় সৌরভের বাবা সাজু মিয়ার কণ্ঠেও।
তিনি বলেন, “ভয়ে স্ত্রী-ছেলেকে নিয়া হাসপাতালে নিরাপদে আছিলাম। এমপি লিটনের ক্যাডাররা ভয়ঙ্কর; ঘটনার পর থাকি তারা হুমকি দিয়া আসছে”।
“প্রতিশোধ নিতে তারা আমাকে ও সৌরভকে অপহরন করতে পারে। আমার বাড়িঘর ভেঙ্গে দিতে পারে-সেই আতঙ্কে ভুগতিছি।”
সংসদ সদস্য লিটনের লোকজনের ভয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সৌরভের কাছেই ছিলেন তার বাবা, মা ও বড় ভাই।
রংপুরের পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “সৌরভকে নিয়ে তার পরিবার যতদিন হাসপাতালে ছিল, ততদিন তাদের নিরাপত্তায় সেখানে দুজন পুলিশ পাহারা ছিল। পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরাও হাসপাতালে অবস্থান করত।”
গত ২ অক্টোবর ভোরে সুন্দগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের ছোড়া গুলিতে আহত হয় গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সৌরভ।
চাচার সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়েছিল সৌরভ। সৌরভের বাম পায়ে একটি ও ডান পায়ে দুটি গুলি লাগে। ওই দিনই তাকে রমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় পরদিন সংসদ সদস্য লিটনকে একমাত্র আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন সৌরভের বাবা। ১৪ অক্টোবর রাতে রাজধানী ঢাকার উত্তরায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে লিটনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তিনি এখন গাইবান্ধা কারাগারে আছেন।