খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৫: ইটালি প্রবাসী এক স্বামী মেইলে লিখেছেন, ঘটনাটি-
বিষয়টা হইলো সিজার ও নরমাল ডেলিভারি নিয়া! আপনি কখনও শুনছেন হলিউড বলিউডের কোনো নায়িকার সিজার কইরা বাচ্চা হইছে? আত্মীয় বন্ধু যারা ইউরোপ আমেরিকায় বউ নিয়া থাকে তাদের বউয়েরও সিজারে বাচ্চা হইছে শুনি নাই। ওদের বাচ্চা হইবার আগে গাইনি ডাক্তার আত্মা শুকানো ভয় দেখাইয়া বলে নাই পানি শুকায়া গেছে! নুচাল কর্ড (নার) প্যাঁচায়া গেছে! পজিশন উল্টায়া গেছে! বিশ্বের কোথাও দাঁড় করানো অজুহাতে পেট কাইট্টা বাচ্চা বের করেনা।
অনলি বাংলাদেশে বাচ্চা জন্ম দিতে গেলে গাইনি ডাক্তারদের হাজারও অজুহাত! আপনেরে এমুনসব ভয় দেখাইবো যে, অনাগত বাচ্চার সামনেই কাল্পনিক কাঠগড়ায় দাঁড় করায়া দিবো! কইবো এ মুহুর্তে সিজার না করলে বাচ্চা বাঁচানো যাবেনা। দায় দায়িত্ব আপনার! এছাড়াও ডেলিভারি পেইন নিয়া ক্লিনিকে যাইবেন তো দিবো একটা ইঞ্জেকশন হান্দাইয়া। ব্যাথা শেষ! এইবার এ অজুহাতেও পেট কাটো!!
এখন ত আবার গাইনিওয়ালারা অজুহাতও দেখায় না। ডাইরেক্ট বইলা দেয় আমি নরমাল ডেলিভারি করাই না! কী আজব দেশ রে ভাই! এত সিজার ডেলিভারি বিশ্বের আর কোনো দেশে হয় কি?? অনেক মায়েরাও কম যায় না! আগেই চুজ কইরা ফালায় সিজারে বাচ্চা নিবে। একটুও কষ্ট সহ্য করবে না! এটা আরেক ফ্যাশন, ইস্টাইল!!
আজব এই দেশ! জন্ম নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষার হার, বৃক্ষ রোপন, টিকা দান, শিশুমৃত্যু হার রোধ এসব কিছুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবুজ মার্ক পাইলেও সিজার ডেলিভারি নিয়া লাল দাগ খাইয়া বইসা আছে অনেক বছর।সরকার কিন্তু স্পিকটি নট!!! স্বঘোষিত নরমাল ডেলিভারি না করনেওয়ালা গাইনি ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ওয়াজিব হয়া গেছে।
এক বন্ধুর কাছে শুনলাম আমেরিকাতে নাকি বাইশ ঘন্টা ডেলিভারি পেইনের পরেও ডাক্তার সিজার করে নাই। সুস্থ বাচ্চা হইছিল, মাও সুস্থ ছিল।
আমার পরিচিত এক গাইনি ডাক্তার (গইইঝ, উএঙ) পঁচানব্বই ভাগ নরমাল ডেলিভারি করাইতো বিধায় কোনো ক্লিনিক তারে নিতে চায় না। এই ডাক্তার এ ক্লিনিক ওই ক্লিনিক এ জেলা ওই জেলা ঘুইরা ঢাকার মিরপুরের এক অখ্যাত ক্লিনিকে থিতু হইছে। আমার কন্যার ডেলিভারি কিন্তু এ ডাক্তারের হাতেই হইছিল। নরমাল। সেকেন্ডবার বউরে আরও বড় ডাক্তার দেখাইলাম (গইইঝ, ঋঈচঝ)। অজুহাত দেখাইয়া, ভয় দেখাইয়া পেট কাইটা দিলো!! -;)
এইবার আরেকটা সত্য ঘটনা বলি, আমি বিদেশে, ফেনীতে আমার স্ত্রী গর্ভবতী। আত্মীয় স্বজন তার প্রসব বেদনায় পাশের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করাইছে। নার্সরা সাথে সাথে ওটিতে নিয়া গেছে এবং গাইনি ডাক্তাররে ফোন দিছে। ডাক্তার ফোনে কয়েকটা ইঞ্জেকশন দিতে নির্দেশনা দিয়ে জাস্ট দশ মিনিটের মধ্যে আইসা সিজার করবো বইলা ফোন রাইখা দেয়। নার্স নীচে যায় ইঞ্জেকশনের জন্য, ডাক্তারও দশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছায়া দেখে নার্স ইঞ্জেকশন পুশ করার আগেই বাচ্চা নরমাল ডেলিভারি হয়া গেছে! ডাক্তারের গেছে মিজাজ খারাপ হইয়া! নার্সদের সে কী বকাবকি! এই বাচ্চা হইলো কেমনে? তোমরা কী করছিলা? দশটা মিনিট স্টপ করাইতে পারছিলা না?!
কই যাই, কই যাইবেন??
সুত্র: জনৈক সবাক লেখকের লেখা অবলম্বনে