খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৫: বিএনপি-জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষ খুন করে বলে দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২ নভেম্বর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা সফল করতে এ বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘তিনি আবারও আগুন নিয়ে নামছেন। আবারও বোমাবাজি করছেন। এটাতো পরিষ্কার, কারা এ সমস্ত হত্যাকাণ্ড করছে। বিএনপি-জামায়াত ধর্মের কথা বলে। আমরা জানি আমাদের কিতাবে আছে—শবে বরাতের পবিত্র রাত, এ রাত ইবাদতের রাত। এ রাতে বৃক্ষরাজি গাছপালাও ইবাদত করে। সেই রাতে যারা কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বাসে পেট্রলবোমা মেরে ঘুমন্ত মানুষকে হত্যা করল। তারাই আশুরার দিন একই কাজ করছে। এদের কাছে ধর্ম, ধর্ম না। ধর্মকে ব্যবহার করে এরা মানুষ খুন করে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এ সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। জনতার সমুদ্রে এদের চিরতরে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দিতে হবে। তাই আমাদের ২ নভেম্বরের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত করতে হবে। ওই জনসমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে তারা চিরতরে ভেসে যাবে।’
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক বলেছিল পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। কানাডার কোর্টে প্রমাণ হয়েছে দুর্নীতি হয়নি। এরপর বিশ্বব্যাংকের কান ধইরা ওঠবস করা উচিত। শুধু তাঁরা না, যারা বলছে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে, তাদের সবাইকে কান ধরে ওঠবস করা উচিত। তিনি বলেন, চিন্তা করেন যাদের দুর্নীতিবাজ বলেছিল, কোর্টে নির্দোষ প্রমাণ হওয়ার আগে তাদের জীবনের দিনগুলো কীভাবে চলছে। অনেকে তো আত্মহত্যার পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। তারা যখন রাস্তা দিয়ে বের হয়, ছেলে-মেয়ে সামনে ফিসফিস শব্দ করত। এরা চোর, এরা দুর্নীতিবাজ।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ জীবন মানুষের জন্য কত দুর্বিষহ। যারা ভদ্রলোক, যাদের মানসম্মানের জ্ঞান আছে, তারাই উপলব্ধি করতে পারে। কিন্তু খালেদা জিয়া এটা করবে না। এতিমের টাকা চুরি করে। তার আবার চোর সাজলে অসুবিধা আছে। মানি লন্ডারিংয়ের টাকা ফিরে আসছে। তার আবার মানসম্মান। কিন্তু বিশ্বব্যাংক যাদের বিনা অপরাধে চোর বলছে, দুর্নীতিবাজ বলছে আজকে তাদের কাছে কীসের কৈফিয়ত? এখন বলে সরি। আপনার সিগারেটের আগুনে আমার শার্ট পুড়ে গেল! এখন বলেন, সরি! কাজেই এ সমস্ত সংস্থার সাবধানে কথা বলা উচিত।
বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশে আইএসের কোনো অস্তিত্ব নেই। তারপরও জোর করে বাংলাদেশের ওপর আইএস চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমা বন্ধুদের বলব—বাংলাদেশে যদি জঙ্গি খুঁজতে চান, তাহলে বিএনপি জামায়াতের মধ্যে খুঁজুন। বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন সংস্করণের নাম হলো হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি।
ত্রাণমন্ত্রী ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আজকে দেশের এই অবস্থার জন্য বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দায়ী। আমি স্বপ্ন দেখি, খালেদা জিয়া আর দেশে আসবেন না। তিনি দেশে বসে মানুষ মারেন। বিদেশে বসে মানুষ মারেন। তার মারা ছাড়া আর কোনো কথা নেই।’ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় পাহারা বসাবেন। কোনো অপরিচিত লোকজন ঘোরা ফেরা করেন কি না, তা লক্ষ্য রাখবেন। এমন কেউকে দেখলে প্রশাসনকে জানাবেন। ধরে পুলিশে দেবেন। এখন ধৈর্য ও ঐক্য প্রয়োজন। আমরা অতন্দ্র প্রহরীর মতো শেখ হাসিনার পাশে থাকতে চাই।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, আওলাদ হোসেন, সহসভাপতি শেখ বজলুর রহমান, মুকুল চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।