Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

6খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৫ : মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ‘গুরুত্ব সহকারে’ তদন্তের দাবি উঠেছে এক গোলটেবিল বৈঠক থেকে।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ওই বৈঠকে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এই দাবি জানান।
বৈঠকের শুরুতেই কয়েকজন শিক্ষার্থী মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, এখানে যেসব বিষয় আলোচনা হয়েছে তার কিছু বিষয়ের সঙ্গে মতৈক্য আছে, কোনো কোনো বিষয়ে দ্বিমত আছে, আবার কোনো বিষয়ে মতানৈক্যও আছে।
“তবে কাগজে যেসব খবর দেখেছি তা থেকে প্রমাণ হয় প্রশ্ন ফাঁস (মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা) হয়েছে। আমি মনে করি নিরপক্ষে এবং ভালোভাবে তদন্ত হওয়া উচিত।”
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ‘জরুরি ভিত্তিতে’ তদন্তের দাবি জানান গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন।
“জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করে দেশে এবং ভবিষ্যতের স্বার্থে সত্য উদঘাটন করা দরকার। তদন্ত না করার কোনো কারণ দেখি না।”
মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে ইঙ্গিত করে সাখাওয়াত বলেন, “প্রশ্ন ফাঁস না হলে কেন ইউজিসির সহকারী পরিচালককে ধরা হল, কেন মারা গেল?
“এই অবস্থা হলে আমরা মেধাশূন্যতার মধ্যে পড়ে গেছি। দেশ অ্যাকচুয়ালি মেধাশূন্য হচ্ছে।ৃআমরা কোথায় যাচ্ছি আমি কনফিউজড।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুলসহ বৈঠকে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন বক্তাই মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের কঠোর সমালোচনা করেন।
তানভির আহমেদ সাব্বির নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, মেডিকেলের প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। ১২ লাখ টাকায় মেডিকেলের প্রশ্ন পাওয়া গেছে।
মেডিকেলের প্রশ্ন ফাঁসের সুষ্ঠু তদন্ত না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মেডিকেলে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তা নাকচ করে আসছেন। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তার।
‘কোন পথে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও ছাত্র সমাজের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক গোলটেবিলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পক্ষেই মত দেন আলোচকরা।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, “আমি মনে করি মেধা থাকলে এক বছর কেন, কাউকে তিন বছর পরেও পরীক্ষার দেওয়ার সুযোগ দেওয়া যায়। অনেকেই অনেক কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে না, তাদের বঞ্চিত করা ঠিক না।”
অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, “আগে থেকে না জানিয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ বন্ধ করা নৈতিকতা বিবর্জিত।”
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না কেন তা বুঝলাম না। আইএসএসবি’ও তো তিনবার দেওয়া যায়।”
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হলে গণতন্ত্রে গতি আসবে না। পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ থাকতে হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেতন বাড়ানো এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পাঠ্য বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবও করেন তিনি।
বৈঠকে পাঁচ দফা তুলে ধরে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে সরকারকে ১০ দিনের সময় বেঁধে দেন গোলটেবিল আয়োজনকারী সংগঠন ‘ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজ’র সভাপতি আজম রুহু।
দাবিগুলো হল- ডাকসুসহ সব ছাত্র সংসদ নির্বাচন, প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ অবারিত করা এবং শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বাজেট ঘোষণা।