খোলা বাজার২৪ ॥ ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনের ঘটনা ছিলো দেশ ও দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র। প্রকাশ্যে দিবালোকে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে আওয়ামী লীগ দেশে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়েছে। যারা এ জঘন্যতম ঘটনা ঘটিয়েছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এত বছরেও হয় নাই যা জাতি হিসাবে আমাদের লজ্জিত করে বলে বাংলাদেশ ন্যাপ‘র আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ অভিমত প্রকাশ করেছেন।
আজ বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনস্থ যাদু মিয়া মিলনায়তনে ২৮ অক্টোবর স্মরণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর আয়োজিত “লগি-বৈঠার তান্ডব ঃ বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র”-শীর্ষক আলোচনা সভায় নগর আহ্বায়ক সৈয়দ শাহজাহান সাজু‘র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। নগর সদস্য সচিব মোঃ শহীদুননবী ডাবলু‘র সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন এনডিপি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপ যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, সম্পাদক মোঃ কামাল ভুইয়া, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ূন কবির বেপারী, ন্যাপ নগর যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আনোয়ার হোসেন, সদস্য মোঃ বেল্লাল হোসেন, মোঃ আবুল কালাম সরদার, আবদুল্লাহ আল-কাউছারী প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, ২৮ অক্টোবর পল্টনে লগি বৈঠা দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। সেদিন ছিল তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। এরপর গত ৯ বছরে এই অপরাধের মাত্রা ও পরিধি এতই বৃদ্ধি পায় যে, এর ফলে সারা দেশে এক নৈরাজ্যের পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং স্বৈরাচারী দলটির ফ্যাসিবাদী চরিত্র এখনো অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেছেন, সরকার নিজের দলের সন্ত্রাসীদের বিচার না করে মামলা প্রত্যাহার করে নিয়ে প্রমাণ করেছে তারাই সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে। তারা অপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে মূলত আইনের শাসনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে হত্যাকারীদের আরো উস্কে দিচ্ছে। হত্যার রাজনীতিকে উৎসাহিত করার পরিণতি কারো জন্যই শুভ নয়। তিনি বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় দিন। এই দিনে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল এবং যারা অতীতে গণতন্ত্রক হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল, যারা গণমানুষের চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তারা একটি নীল-নকশার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে লগি-বৈঠা নিয়ে জনগণের ওপর আক্রমণ চালায়।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ শাহজাহান সাজু বলেছেন, ২০০৬ সালের এই দিনে যে নির্দয়, নিষ্ঠুর ও পাশবিক কায়দায় আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা নরহত্যায় মেতে উঠেছিল তা শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে হতবাক করেছে। লাশের ওপর নৃত্য করার দৃশ্য দেখে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ নির্মম হত্যাকান্ড সংঘটিত করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের স্বাভাবিক ধারাকে ব্যাহত করা হয়েছে।