খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৫ : সন্ধি কালের ছেলেমেয়েদের নিয়ে মা-বাবার চিন্তার অন্ত নেই। তাঁদের কিশোর ছেলে বা মেয়েটা দিন দিন কেমন মোটা হয়ে যাচ্ছে। মা-বাবারা এত চিন্তা না করে যদি ছেলেমেয়েদের প্রতি একটু খেয়াল করেন তাহলে দেখতে পাবেন তাঁর সন্তান বাসায় তৈরি খাবার থেকে বাইরের খাবারের প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়েছে। স্থূল হওয়ার পেছনে এটাই একটা বড় কারণ।
এই বয়সে ছেলেমেয়েদের স্বাদের পরিবর্তন ঘটে। এ সময় তারা ফাস্টফুড বা জাংকফুডের প্রতি অধিক মাত্রায় ঝুঁকে পড়ে। ফাস্টফুড তরুণদের শরীরের ওজন এবং ইনস্যুলিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
‘একটু সচেতন করতে পারলেই একটি সুষম খাদ্যাভ্যাস তৈরি করা সম্ভব।’ বললেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো। খেয়াল রাখতে হবে শরীরে শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং চর্বি সঠিক মাত্রায় থাকাটা খুব জরুরি।
কীভাবে তৈরি করবেন খাদ্যাভ্যাস্ত
প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ আছে এমন সব খাবার দিয়েই সাজাতে পারেন আপনার খাবার টেবিল সকাল এবং রাতের খাবার সময়। সম্ভব না হলে অন্তত একবার বাড়ির সবাই মিলে একসঙ্গে বসে খেতে পারেন। এতে আপনার কিশোর সন্তানটির মধ্যে সচেতনতা তৈরি হবে। বাড়ির খাবারের প্রতি আগ্রহী হবে। বুঝতে পারবে বাড়িতে তৈরি খাবারগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। তাহলেই বুঝতে পারবে সুষম খাবারের উপকারিতা।
আবার বাইরের খাবারের কিছু পদ বাড়িতেই রান্না করতে পারেন। কিশোর সন্তানটিকে রেস্তোরাঁতেও নিয়ে যেতে পারেন মাসে দু-একবার। এতে করে বাইরের খাবারের চাহিদাও মিটবে আবার মানসিকভাবে শান্তিও আসবে।
খাবারের সঠিক তালিকা
বয়ঃসন্ধিকালের ছেলেদের জন্য প্রতিদিন ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ এবং মেয়েদের জন্য ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ কিলো ক্যালরি প্রয়োজন। ওজন বেশি হলে তেল ও চর্বির পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। ওজন কম হলে তেল চর্বির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
সকালের নাশতা: দীর্ঘ একটা রাত না খেয়ে কাটে। তাই সকালের নাশতাটা ভারী হওয়া প্রয়োজন। এ সময় খেতে দিতে পারেন রুটি বা পরোটা দুই পিচ, সবজি, ডিম ভাজি বা সুজির হালুয়া। এক গ্লাস মৌসুমি ফলের রস। পরিবর্তন হতে পারে একেক দিন একেক খাবারের।
টিফিন: সবজি, মাংস বা ডিমের তৈরি খাবার চার ভাগের এক ভাগ। অথবা কমলা বা কলা একটা।
দুপুরের খাবার: ভাতের সঙ্গে মাছ বা মাংস, সবজি, ঘন ডাল এবং লেবু সালাদ। ভাতের থেকে সবজি পরিমাণে বেশি হলে ভালো হয়।
বিকেলের নাশতা: বিকেলের নাশতায় হতে পারে ঘরে বানানো স্যান্ডউইচ, ফলের তৈরি কাস্টার্ড, লুচি, সমুচা, শিঙাড়া ইত্যাদি মুখরোচক খাবার। অবশ্যই তা পরিমাণমতো।
রাতের খাবার: রাতের খাবারটাও হতে হবে পরিপূর্ণ, দুপুরের খাবারের অনুরূপ। মূল খাবার শেষে যেকোনো একটা মিষ্টিজাতীয় খাবার যোগ করতে হবে। যেমন: পায়েস, মিষ্টি, সন্দেশ, ফিরনি ইত্যাদি।
রাতে ঘুমানোর আগে দিতে পারেন এক গ্লাস দুধ। অনেকে আবার রাতে দুধ খেতে পারে না। সে ক্ষেত্রে সন্ধ্যায় অথবা সকালেও এটি খেতে দেওয়া যেতে পারে।