খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৫: সিলেটের শাহজালাল তৃতীয় সেতুর বিদ্যুতের বাতিগুলো আট বছর ধরে জ্বলছে না। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মধ্যে রশি টানাটানির কারণে দীর্ঘদিনেও বাতিগুলো সচল করা যায়নি। এতে এ সড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে স্থানীয় লোকজন এবং বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি ঢাকা-সুনামগঞ্জ বাইপাস সড়কের সঙ্গে যুক্ত সিলেট সদর উপজেলার তেমুখী এলাকায়। ২০০৬ সালে চারদলীয় জোট সরকারের শেষ সময়ে সিলেটের সুরমা নদীর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ওই সময় সেতুতে ২০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি লাগানো হয়েছিল। সেসব খুঁটির বাতিগুলো বছর খানেক সচল ছিল। এরপর সব বাতি নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থায় প্রায় আট বছর ধরেই অন্ধকারে পথ চলছে স্থানীয় মানুষ।
স্থানীয় সাতজন বাসিন্দা জানান, এ সেতু দিয়ে ঢাকা-সুনামগঞ্জ সড়কের বাস, ট্রাক ছাড়াও প্রতিদিন হাজারো ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করে। এ ছাড়া সিলেট সদর উপজেলার ইনাতাবাদ, অনন্তপুর, বাদেয়ালি, মাসুকগঞ্জ, সুজাতপুর, মীরেরগাঁও, উজানপাড়া, বাছিরপুর; দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আহমদপুর, তেলিকোণা এবং বিশ্বনাথ উপজেলার কামালবাজার ও তেলিবাজার গ্রামের সাত থেকে আট হাজার মানুষ নিয়মিত এ সেতু দিয়ে সিলেট নগরে আসে।
ইনাতাবাদ গ্রামের রাজমিস্ত্রি রফিক মিয়া বলেন, একটিও বাতি জ্বলে না। সন্ধ্যার পর থেকেই তাই সেতু এলাকা ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে যায়। অথচ সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত হাজারো মানুষ এ সেতু দিয়ে চলাচল করে। অন্ধকার থাকায় ছিনতাইকারীরা সুযোগ বুঝে লুটপাট চালায়। জরুরি কাজে রাত ১২টার পরে তো সেতু দিয়ে চলাচল করতেই ভয় করে।
জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন দাবি করেন, গত ছয় মাসে সেতু এলাকায় ছিনতাই-সংক্রান্ত কোনো মামলা বা জিডি করেনি কেউ। তবে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে যাতে কেউ ছিনতাই কিংবা বিশৃঙ্খলা না ঘটাতে পারে, সে জন্য সন্ধ্যার পর থেকে ওই এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশি টহল থাকে।
সম্প্রতি এক রাতে সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর ওপর স্থাপিত ২০টি বৈদ্যুতিক বাতির একটিও জ্বলছে না। একটি খুঁটি হেলে পড়েছে, বাকিগুলোতে বাতিই লাগানো নেই। অন্ধকারের মধ্যেই আশপাশের গ্রামের মানুষ এর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। একইভাবে সেতু দিয়ে ট্রাক, বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা চলছে।
সেতু এলাকার বাতিগুলো সচল করার বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এবং বিদ্যুৎ বিভাগ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে। সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কেবল সেতুটি নির্মাণ করে দিয়েছি, এটির বৈদ্যুতিক বাতি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বিদ্যুৎ বিভাগের।’ অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিভিশন-১) আবুল হোসেন বলেন, ‘বাতিগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব সওজের, আমাদের নয়।’