খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৫: চাকরির জন্য সাক্ষাৎকার দিতে যাবেন। যেকোনো ধরণের পরিস্থিতি সামাল দিতে আপনি প্রস্তুত। তবে তার আগে একটু ভাবুন, দীর্ঘ নিশ্বাস নিন। তবে চাকরির জন্য সাক্ষাৎকার দিতে যাওয়ার পূর্বে আপনার আশেপাশে অনেকেই আপনাকে বলেছে ভালো করে প্রশ্নোত্তর গুলো মনে করে নিন এবং বারবার একটু ঝালিয়ে নিন। তারপরেও কিছু মৌলিক সমস্যা থেকেই যায়, কারন সাক্ষাতকারটি কোনো পরীক্ষা নয়। এটি সম্পূর্ণরূপে একটি আলোচনা সভা যেখানে আপনাকে প্রমান করতে হবে যে আপনি কর্মদক্ষ, পরিশ্রমী ও বিশ্বাসযোগ্য। কে না চায় তার স্বপ্নের চাকরি পেতে। এখানে আপনার স্বপ্নের চাকরির সাক্ষাতকারে সফল হওয়ার জন্য ৭টি বিশেষ দিক আলোচনা করা হল :
১. লোক দেখানো প্রস্তুতি এড়ান : সাক্ষাৎকার মানে শুধু চেহারা দেখানো নয়। যে প্রতিষ্ঠানে সাক্ষাৎকারের জন্য যাচ্ছেন এবং কোন বিষয়ে আবেদন করেছেন, আগে থেকেই সে বিষয়ে আপনার ভূমিকা সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা নিয়ে রাখুন। প্রতিষ্ঠানটি কিসের ব্যবসা করে, তারা কিভাবে লাভবান হয় এবং আপনার কোন দক্ষতার জন্য তারা আপনাকে নিবে এসব বিষয়ে আগে থেকেই পড়াশোনা করে প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।
২. ফার্স্ট ইম্প্রেশন ইজ দ্য লাস্ট ইম্প্রেশন : ইংরেজিতে একটা কথা আছে ‘ফার্স্ট ইম্প্রেশন ইজ দ্য লাস্ট ইম্প্রেশন’, মানে প্রথম দর্শনই মুখ্য। আপনি যে প্রতিষ্ঠানে সাক্ষাৎকারের জন্য যাচ্ছেন সেখানে আপনার প্রবেশ থেকে বের হওয়া পর্যন্ত সবধরণের গতিবিধি পর্যবেক্ষন করা হবে তাই সতর্ক থাকুন তবে ঘাবড়াবেন না। চিন্তামুক্ত থাকুন, দীর্ঘশ্বাস নিন। মাথা থেকে সবধরণের দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। আতœবিশ্বাসে ভরপুর সুন্দর হাসিমুখ নিয়ে সাক্ষাৎকারের জন্য উপস্থিত হন।
৩. যুক্তি সঙ্গত কথা বলুন : সাক্ষাৎকারে আপনাকে তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য যোগ্য হিসেবে প্রমাণ করতে হবে। তাই আপনার সবচাইতে সফল গল্পগুলো সেখানে বলুন এবং আপনার পূর্ব কর্মজীবনের সোনালী সফর সম্পর্কে বলুন। তবে অবশ্যই আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন সে প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্তিসঙ্গত বিষয়গুলো তুলে ধরুন।
৪. নতুনদেরও অভিজ্ঞতা আছে : হতে পারে আপনি সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন এবং পূর্বে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন নি। এর মানে আপানার কি কোনো অভিজ্ঞতা নেই। আজকের দিনে এই ধরণাটি পালটে ফেলুন। কেননা আপনার তত্ত্বীয় জ্ঞানের অভিজ্ঞতা আছে। আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় আপনার পঠিত বিষয়ে কাজ করেছেন এবং ইন্টার্নশিপও করেছেন। তাই আগের ধারণা ভুলে যান এবং নতুন করে এগিয়ে যান।
৫. নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা : সব প্রতিষ্ঠানই দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোক খুঁজে। এসব গুণের পাশাপাশি আরেকটি গুনও সমানভাবেই প্রয়োজন আর সেটি হচ্ছে নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা। দলগত ভাবে কাজ করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকুন এবং আপনার দলকে যেন সবসময় নেতৃত্ব দিতে পারেন সে বিষয়ে সজাগ হন। অন্যকে উৎসাহ দেওয়ার ক্ষমতা আপানার দল এবং আপনার ক্যারিয়ার কে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
৬. সাক্ষাৎকারই সবকিছু নয় : শুধু চাকরি পাওয়ার আশায় যে সাক্ষাৎকার দিবেন সে ধারণা ভুল। আপনি একটি প্রতিষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দেওয়ার মাধ্যমে সেই প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও জানতে পারবেন। এতে করে সাক্ষাৎকার দেওয়ার মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠান কিরকম এবং তারা কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে আপনার একটা অভিজ্ঞতা তৈরি হবে।
৭. প্রত্যাখ্যান সব খেলারই একটি অংশ : এ জীবনের সবকিছুই একটি খেলার মতো। কেউ জিতে তো কেউ হারে। কিন্তু এর মানে এই নয়, যে হেরে গেলো সে কখনোই জয়ী হতে পারবে না। ইংরেজিতে একটা কথা আছে ‘ফেইলিউর ইজ দ্য পিলার অব সাকসেস’ যার অর্থ ‘ব্যর্থতাই সফলতার চাবিকাঠি’। বৈদ্যুতিক বাল্বের আবিষ্কারক বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন বাল্ব বানানোর সময় এক হাজার বার ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু একসময় তিনি সফলতার মুখ দেখেন ঠিকই। তার এই ব্যর্থতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কাছে বৈদ্যুতিক বাল্ব কিভাবে না বানানো যায় সেটির এক হাজারটি উপায় আছে।’ চলুন আমরা নিজেকে সাহায্য করি এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এর দিকে এগোই।