Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১ নভেম্বর ২০১৫: প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন খুন হওয়ায় তার বাসায় নেমে 19এসেছে শোকের ছায়া; তবে একমাত্র ছেলের জেএসসি পরীক্ষার কারণে ওই বাসায় শোকের প্রকাশ ঘটছে অনেকটা নিস্তব্ধতায়।
স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমানের চাকরির সুবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক কোয়ার্টারেই থাকতেন দীপন। কোয়ার্টারের ৭/এ ফ্ল্যাটে দুই সন্তান নিয়ে বসবাস ছিল বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার রাজিয়া ও প্রকাশক দীপনের।
তাদের এক ছেলে রিদাদ ও এক মেয়ে রিদমা। রোববার থেকে বড় সন্তান রিদাদের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে সে।
শনিবার রাত ১০টায় সুফিয়া কামাল হলের কোয়ার্টারের ওই বাসায় গিয়ে অনেক মানুষকে দেখা গেলেও এক ধরনের নিস্তব্ধতা ছিল লক্ষ্যণীয়। একটি কক্ষে ডা. রাজিয়ার সঙ্গে কথা বলে একে একে চলে যেতে দেখা যায় শোক জানাতে আসা আত্মীয়-স্বজন ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের।
পাশের অন্য একটি কক্ষে পড়তে বসিয়ে দেওয়া হয় রিদাদকে। ওই কক্ষ থেকে কয়েকবার বেরিয়ে এসে ড্রয়িং রুম ধরে শোকে কাতর রিদাদকে নীরবে হেঁটে যেতে দেখা যায়।
“বাবার এমন আকস্মিক চলে যাওয়ায় যদিও অনেক কষ্টের মধ্যে ছেলেটা (রিদাদ) আছে, তবুও সবাই চাচ্ছে ও যাতে পরীক্ষাটায় অন্তত অংশ নিতে পারে। আমরা চাইছি বাসাটা যাতে ঠাণ্ডা থাকে,” বলছিলেন কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নিলুফার নাহার।
শোক জানাতে রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই বাসায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এ সময় তিনি ডা. রাজিয়া ও তার বাবার সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা জানান।
দীপনের বাসার চত্বরে উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “কিছুদিন আগে আমরা একজন শিক্ষকের সন্তান অভিজিৎকে হারিয়েছি। এবার হারিয়েছি অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক দীপনকে, যেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের সন্তান।
“এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের ওপর এটা বড় ধরনের আঘাত।”
ঘটনার জন্য দায়ীদের দ্রুত খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
“একই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে একই কায়দায় খুন করা হয়েছে। এদের যোগসূত্রও খুঁজে বের করা উচিত।”
গত ফেব্র“য়ারিতে ঢাকায় খুন হওয়া লেখক অভিজিৎ রায়ের বইয়ের দুটি প্রকাশনা সংস্থায় শনিবার হামলা হয়।
দুপুরে লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর কার্যালয়ে হামলায় প্রকাশক আহমেদুর রশিদ টুটুলসহ তিনজন আহত হন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের অফিসে খুন হয়েছেন জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক দীপন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের একমাত্র ছেলে দীপন ছিলেন লেখক অভিজিতের স্কুলবন্ধু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে অভিজিৎ ধর্মান্ধ ও ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লিখতেন।
তার বই প্রকাশ কারণেই দীপনকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছেন বাবা ফজলুল হক।