খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১ নভেম্বর ২০১৫: মিসরের সিনাইয়ে রুশ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার পেছনে আইএস (ইসলামিক স্টেট) নয়, বরং কারিগরি ত্রুটির কারণেই এটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন মিসরীয় প্রধানমন্ত্রী। রাশিয়ার পক্ষ থেকেও বিমান ভূপাতিতের দাবিকে নিশ্চিত করা হয়নি। খবর বিবিসির।
সিনাই উপত্যকায় শনিবার ২২৪ আরোহীসহ রুশ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ জানিয়েছে, ওই বিমানটি ভূপাতিতের দাবি করেছে আইএস।
তবে মিসরের প্রধানমন্ত্রী শরীফ ইসমাইল বলেছেন, বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন এয়ারবাসটিকে ভূপাতিত করা হয়নি। কারিগরি ক্রুটির কারণেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
রাশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী মাকসিম সকোলভ দেশটির বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সকে বলেছেন, বিমান বিধ্বস্তের অনেক প্রতিবেদনই সত্য নয়। বিমানটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মিসরের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত তা ৩১ হাজার ফুট (৯ হাজার ৪৫০ মিটার) উপর দিয়ে উড়ছিল।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এত উঁচু দিয়ে উড়া বিমানকে কাঁধে বহনযোগ্য এয়ার মিসাইল দিয়ে বিধ্বস্ত করা সম্ভব নয়। সিনাইয়ের বিদ্রোহীরা সাধারণত এই মিসাইলটি ব্যবহার করে থাকে।
এদিকে কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিমানটির ব্ল্যাকবক্স খুঁজে পাওয়া গেছে। তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
এ দুর্ঘটনা তদন্তে মিসরের সঙ্গে যোগ দিয়েছে রাশিয়া ও ফ্রান্সের তদন্ত কর্মকর্তারা।
এর আগে মিসরের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী হোসাম কামাল বলেছিলেন, বিমানটির ফ্লাইটে কোনো ত্রুটির লক্ষ্মণ দেখা যায়নি। রুশ কোগালিমাভিয়া এয়ারলাইনারের পক্ষ থেকেও বিমানটিতে ত্রুটি ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে।
তবে মিসরের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে বিমানটির পাইলট কারিগরি ত্রুটি লক্ষ্য করছেন বলে জানিয়েছিলেন।
বিমানটির কো-পাইলটের স্ত্রীও বলেছেন, তার স্বামী বিমানের কারিগরি অবস্থা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন।
লোহিত সাগরের শারম আল-শেখ রিসোর্ট থেকে শনিবার উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বেসামরিক যাত্রীবাহী এয়ারবাস-৩২১ বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ৯২৬৮ ফ্লাইটের বিমানটি মিসর থেকে সাইপ্রাস হয়ে রাশিয়ার পিটসবার্গের উদ্দেশে যাচ্ছিল।
বিমানটিতে মোট ২২৪ আরোহী ছিল। এদের মধ্যে ২৫ শিশুসহ ২১৭ যাত্রী ও সাত ক্রু ছিল যাদের প্রত্যেকেই নিহত হয়েছেন।
মিসরীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানটিতে ২১৩ রুশ পর্যটক ও চারজন ইউক্রেনের নাগরিক ছিল। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেখানে অন্তত একজন বেলারুশের নাগরিক রয়েছে।
এ পর্যন্ত বিমানটির ১২৯ আরোহীর লাশ উদ্ধার করে কায়রোতে নেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ান কোগালিমাভিয়া এয়ারলাইনারের যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্তের পর মিসরের সিনাই উপত্যকার উপর দিয়ে সাময়িকভাবে বিমান চলাচল বন্ধ রেখেছে এমিরেটস, এয়ার ফ্রান্স ও লুফথানসা এয়ারলাইন্স।