খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ২ নভেম্বর ২০১৫: ক্রয় কার্যক্রমে সরকারি অপচয় ১০ ভাগ কমানো গেলে জিডিপি শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ বাড়বে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সোমবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে তৃতীয় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের তিনি এ কথা জানান।
দাতাসংস্থা বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, “সরকারি ক্রয়ে যে পরিমাণ অপচয় হয় তার ১০ ভাগ রোধ করা গেলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আধা শতাংশ বাড়বে।
“কেনাকাটায় পণ্যের সঠিক মান, সঠিক পরিমাণ ও সঠিক সময় তিনটিকে বিবেচনায় নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবেই সরকারি ক্রয়ে অপচয় রোধ হবে।”
সরকারি কেনাকাটায় সঠিক দাম দেখার পাশাপাশি পণ্য কতটা টেকসই সে বিষয়টিও দেখতে হবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
মুস্তফা কামাল বলেন, “জনগণের করের টাকায় সরকারি ক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তাই জনগণের অর্থ তাদের উন্নয়নে সঠিক ব্যবহারে আমাদের আরও দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দেখাতে হবে। এ জন্য সরকারি ক্রয়ে ডিজিটালাইজেশনের কোনো বিকল্প নেই।”
ক্রমান্বয়ে সব মন্ত্রণালয়ের ক্রয় কর্যক্রম কাগজহীন করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
“এবারের সপ্তম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনায় গড় জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমকি ৪ শতাংশ ধরা হয়েছে। এই প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যাপক সরকারি বিনিয়োগ হবে। একে অর্থবহ করতে হলে পণ্য ক্রয়ে ডিজিটালাইজেশনের কোনো বিকল্প নেই।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
“ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিটি দেশ যদি একে অপরের সাহায্য করতে পারে, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো কেন পারবে না। যদি ইউরোপের দেশগুলোর মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো একে অপরের সহযোগিতা করে তবে এই অঞ্চলে আন্তঃবাণিজ্য আরও বাড়াবে।”
বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের লিড ইকোনমিস্ট ও ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্টিন রামা বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতে প্রায় ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে।
“এই বিশাল বিনিয়োগের জন্য অবশ্যই ই-প্রকিউরমেন্ট বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ক্রয় করতে হবে।”
বাংলাদেশের বাজেটের এক চতুর্থাংশই ক্রয় কাজে ব্যয় হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বেসরকারি খাতকেও এর সঙ্গে যুক্ত করার বিষয়ে জোর দিয়ে মার্টিন রামা বলেন, ২০০২ সাল থেকেই বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের ই-প্রকিউরমেন্ট নিয়ে সহযোগিতা করে আসছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থতি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজুহিকো হিগুচি প্রমুখ।