Tue. May 6th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

69খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ২ নভেম্বর ২০১৫: ঢাকায় একই দিনে এক প্রকাশককে হত্যা এবং আরেক প্রকাশকের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।
আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণধার ফয়সল আরেফিন দীপনকে তার কার্যালয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান সোমবার বিকেলে শাহবাগ থানায় মামলা করেন বলে পরিদর্শক (তদন্ত) আবু জাফর জানান।
আর ঢাকার লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় হত্যাচেষ্টার মামলাটি করেছেন প্রকাশনা সংস্থাটির কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন টুটুলের পক্ষে এক স্বজন বিকেলে থানায় এসে এ মামলার এজাহার জমা দেন বলে তেজগাঁও পুলিশের উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জানান।
এ দুটি প্রকাশনা সংস্থা থেকেই লেখক অভিজিৎ রায়ের কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে, যিনি নিজেও গত ফেব্র“য়ারিতে একইভাবে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন।
একই দিনে দুই প্রকাশকের ওপর হামলার পেছনে কারা রয়েছে সে বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত না হলেও তাদের সন্দেহ আনসারুল্লাহ বাংলাটিমকে ঘিরে। এর আগে অভিজিৎ রায়সহ ব্লগার হত্যার তদন্তেও ওই জঙ্গি সংগঠনটির নাম উঠে এসেছে।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে শুদ্ধস্বরের ওই কার্যালয়ে ঢুকে তিনজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তিন হামলাকারী। টুটুল ছাড়াও লেখক রণদীপম বসু ও ব্লগার তারেক রহিম হামলায় আহত হন।
তারা তিনজনই বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে তারেকের বাঁ হাতের অবস্থা গুরুতর, তার পেটে গুলির ক্ষতও পাওয়া গেছে।
মামলার এজাহারে টুটুল বলেছেন, সেদিন দুপুরে তারা তিনজন কার্যালয়ে বসে আলোচনা করার সময় পৌনে ৩টার দিকে ‘বইয়ের ক্রেতা সেজে’ আনুমানিক ৩০-৪০ বছর বয়সী একজন সেখানে যায়। এর পরপরই ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী আরও কয়েকজন অফিসে প্রবেশ করে।
“তাদের একজন কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে অফিসের কর্মচারী রাসেলকে (২৮) বারান্দায় পেয়ে জিম্মি করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা দ্রুত আমার কক্ষে ঢুকে ধারালো অস্ত্র (দা-চাপাতি) দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা, কপাল, হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।”
একই সময়ে ‘দুর্বৃত্তরা’ তারেক রহিমকে কোপায় ও গুলি করে এবং রণদীপম বসু ওরফে সুদীপকেও হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করে বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়।
ওই ঘটনার ঘণ্টা তিনেক পর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়।
তার স্ত্রী রাজিয়া রহমানের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শনিবার আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি তার শ্বশুর ও দীপনের সহকর্মীদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের খবর পান।
ফয়সল আরেফিন দীপন ফয়সল আরেফিন দীপন “আমি জানতে পারি, বেলা সাড়ে ৩টা থেকে ৩টা ৫০ মিনিটের মধ্যে জাগৃতি প্রকাশনীর অফিসে ঢুকে অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘাড়ের পিছনে কুপিয়ে আমার স্বামী ফয়সাল আরেফিন দীপনকে (৪৩) হত্যার পর অফিসের তালা লক করে পালিয়ে যায়।”
দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছেলের লাশ শনাক্ত করলে শাহবাগ থানা পুলিশ সুরৎহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
দীপনের বাবা আবুল কাসেম ফজলুল হক সেদিন সাংবাদিকদের জানান, দুপুর দেড়টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে অফিসে যান তার ছেলে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মোবাইলে কল করে সাড়া না পেয়ে বিকালে আজিজ সুপার মার্কেটে গিয়ে দীপনের লাশ পান তিনি।
মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম (গণমাধ্যম) বলেন, “পুলিশ মামলাগুলোর তদন্তে বিভিন্ন দিক বিবেচনায় রেখেছে। বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে পুলিশ এগোবে।