Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০১৫: প্রতিবাদের হরতালে জেলহত্যা দিবস’ 4পালনের আহ্বান জানিয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
প্রকাশক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ডাকা মঙ্গলবার আধাবেলা হরতাল ডেকেছে জাগরণ মঞ্চ। ১৯৭৫ সালের এই দিনে কারাগারে হত্যা করা হয়েছিল জাতীয় চার নেতাকে।
জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশককে হত্যা এবং শুদ্ধস্বরের কর্ণধারসহ তিনজনকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মঙ্গলবার সারাদেশে আধাবেলা হরতাল ডেকেছে জাগরণ মঞ্চ।
হরতালের সমর্থনে সোমবার সন্ধ্যায় শাহবাগে মশাল মিছিলের আগে ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, “আগামীকাল জেলহত্যা দিবস। এ দিনে জাতীয় যে চারজন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা। যে কারণে তারা সংগ্রাম করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্যই আমরা আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।”
জেলহত্যা দিবস কোনো উৎসবের দিন নয় মন্তব্য করে ইমরান বলেন, “তাই উৎসবের মাধ্যমে নয়, প্রতিবাদের হরতাল পালনের মধ্য দিয়েই জেলহত্যা দিবস পালন করুন। প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধে সব বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদী হয়েই এসব দিবস পালন করা উচিত।”
’৭৫ এর হত্যাকাণ্ড, জেল হত্যাকাণ্ড, ব্লগার হত্যাকাণ্ড কোনোটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলেও মত প্রকাশ তিনি।
হরতালের প্রস্তুতি সম্পর্কে মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হরতাল পালন করা হবে। ইতোমধ্যেই সারাদেশের গণজাগরণ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের হরতাল পালনে যথাযথ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সারা দেশের কর্মসূচি শাহবাগ থেকে সমন্বয় করা হবে।
তবে জরুরি সেবা ও অ্যাম্বুলেন্স এই হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলেও জানান তিনি।
চলমান জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার সময় ইতোমধ্যে সকাল ১০টা থেকে পিছিয়ে দুপুর ২টায় নেওয়ায় হরতালের প্রভাবে পরীক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে মনে করেন ইমরান।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা এই সংগঠনের হরতাল ডাকার কারণ ব্যাখ্যা করে ইমরান বলেন, “উগ্রবাদীদের চিন্তার সঙ্গে যারাই দ্বিমত পোষণ করছেন তাদেরকেই হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একে একে হত্যা করা হচ্ছে। এরই প্রতিবাদে আমরা দুইদিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছি।
“যেহেতু সারা দেশের মানুষকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং তারা জানমালের নিরাপত্তা সংকটে ভুগছেন, তাই নিজেদের জায়গা থেকে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ হরতাল কর্মসূচি পালন করবেন বলে আশা করছি।”
২০১৩ সালে শাহবাগে গণজাগরণ আন্দোলন গড়ে ওঠার সূত্রপাত ঘটেছিল ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের একটি মানববন্ধন থেকে।
এরপর যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি জানিয়ে আসা অনেক দল, সংগঠন এই আন্দোলনে যুক্ত হলেও গণজাগরণ আন্দোলনের বিরোধীরাও শাহবাগ আন্দোলনকে ‘ব্লগারদের আন্দোলন’ হিসেবে দেখে আসছেন।
শাহবাগ আন্দোলন শুরুর কয়েকদিনের মধ্যে গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এরপর একই কায়দায় হত্যা করা হয় আরও কয়েকজন ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টকে, যারা সবাই গণজাগরণ আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন।
সোমবার সন্ধ্যায় হরতালের সমর্থনে সমাবেশ শেষে একটি মশাল মিছিল শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে কাঁটাবন, নীলক্ষেত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে আবার শাহবাগে ফিরে শেষ হয়।
হরতালের সমর্থনে চট্টগ্রামেও মশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। বিকালে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড় থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়ে নিউ মার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
নিউ মার্কেট চত্বরের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে চট্টগ্রামের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মঙ্গলবারের হরতাল সফল করার আহ্বান জানান চট্টগ্রাম গণজাগরণ মঞ্চের সদস্য সচিব চন্দন দাশ।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে গণজাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের সমন্বয়ক শরীফ চৌহান, সংগঠক সুনীল ধর, চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শিমুল বৈষ্ণব, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক হাবিব বিপ্লব, ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি আল কাদেরী জয়, মুক্তিযোদ্ধা পঞ্চানন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।