Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

8খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০১৫: উগ্রপন্থিদের দমিয়ে রাখতে এখন পর্যন্ত সফল হলেও সামনে ঝুঁকি আছে বলে হুঁশিয়ার করেছেন ভারতের সাবেক এক লেফটেন্যান্ট জেনারেল।
ভারতের সেনাবাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলে আসা মুসলিম এই সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, মুসলিম জনঅধ্যুষিত বাংলাদেশকে ‘খিলাফত’ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ঠিকানা হিসেবে নিতে পারে আইএস।
অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইন অবশ্য বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে এখনও আইএসের ‘বড়’ উপস্থিতি দেখছেন না।
“এই মুহূর্তে তারা নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখেছে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে না। তবে এরা ক্ষেত্র খুঁজছে,” বলেন তিনি।
কাশ্মিরে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়া হাসনাইন বর্ণিল পেশাগত জীবনে ভারতের সামরিক সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস দমনে চ্যালেঞ্জ নিয়ে মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্ট্যাডিজে (বি আইআইএসএস) একক বক্তব্য অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মইনুল ইসলামসহ অনেক জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক, কর্মকর্তাসহ অনেকে উপস্থিত হন এই বক্তৃতা শুনতে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে দুই বিদেশি খুন এবং পুরান ঢাকায় শিয়া সমাবেশে বোমা হামলায় আইএসের দায় স্বীকারের খবরের পর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠীকে নিয়ে ভারতীয় এই জেনারেলের এই বক্তব্য এল।
বাংলাদেশ সরকার আইএসের দায় স্বীকারের খবর নাকচ করলেও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাসনাইন বলেন, আইএসের সম্পৃক্ততা আছে কি না তা খুঁজে দেখার বিষয়টি বাংলাদেশের সংস্থাগুলোরই উপর নির্ভর করছে।
তার মতে, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে যে সব ঘটনা ঘটছে ‘তা কীভাবে এখানে কাজ করতে হবে তা দেখার জন্য হতে পারে, যদি কিছু করা হয়ে থাকে’।
“কাশ্মিরেও অনেকে ইসলামিক স্টেটের পতাকা ওড়াচ্ছে, যতসব ফালতু। এগুলো সব প্রতীকী।”
তবে মুসলমানদের আধিক্য এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের সংযোগকারী ভৌগলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ আইএসের ‘গুরুত্বপূর্ণ’ লক্ষ্যবস্তু হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
হাসনাইন বলেন, খিলাফত (ইরাক-সিরিয়ায়) প্রতিষ্ঠায় সফল হলে তারা বৃহত্তর সীমানা খুঁজতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় বড় সংখ্যায় মুসলমান আছে। কিন্তু ভারতে মুসলমানদের বাস সীমাবদ্ধ এলাকায়। ইসলামিক রিপাবলিক হওয়ায় পাকিস্তানের মুসলমানদের প্রতি মনোযোগ থাকতে পারে তাদের।
“বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ এবং এই কারণে কথিত খেলাফত আন্দোলন সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে তারা গুটি হিসেবে নিতে পারে।”
ঝুঁকির কথা বললেও ধর্মনিরপেক্ষতা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হওয়ায় তা ‘পাকিস্তানের মতো অত অসহায় নয়’ বলেও মন্তব্য করেন ভারতের এই জেনারেল।
সন্ত্রাসবাদের বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় তিনটি বিষয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন হাসনাইন। এর মধ্যে জঙ্গি মতাদর্শের বিস্তারকেই বড় উদ্বেগ মনে করেন তিনি। অন্য দুটি বিষয় হলো- নেতৃত্ব ও অর্থায়ন।
“এটাই (মতাদর্শ) এখন দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের বড় উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশ ও ভারতে এটা একটা বড় উদ্বেগ। উগ্রপন্থার সব ক্ষেত্র নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন,” বলেন তিনি।