Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

19খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০১৫: একটা সময় এমন হতো। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড গোল পাচ্ছে না? তো বলটা ওয়েইন রুনিকে দিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে যেত। কিন্তু গত কদিন ধরে এ ‘নিশ্চয়তা’য় একটু ভাটা পড়ে গেছে। নিয়মিত তো দূরে থাক, গোলের দেখাই পাচ্ছিলেন না রুনি। অবশেষে এল সেই গোল, প্রায় ৪০৪ মিনিটের বিরতি কাটিয়ে। তাতে টানা তিন ম্যাচে গোলশূন্য ইউনাইটেডও কাল চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে হারাল সিএসকেএ মস্কোকে।
ঠিক বিপরীত ধারা মেনে গোল করেই যাচ্ছে ইউনাইটেডের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটি। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে জুভেন্টাসের কাছে হেরে যাওয়া সিটিজেনরা কাল চ্যাম্পিয়নস লিগে ‘তর্কসাপেক্ষে’ তাদের সেরা খেলাটাই খেলেছে। টানা দুবারের ইউরোপা কাপ জয়ী সেভিয়ার মাঠে তাদের জয়টা ৩-১ গোলে।
সিটির গ্রুপসঙ্গী জুভেন্টাস অবশ্য এখনো ধুঁকছে। বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখের সঙ্গে ১-১ ড্র করেছে গতবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ রানার্সআপরা। আর এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে এ পর্যন্ত সম্ভবত সবচেয়ে বড় অঘটনটার জন্ম দিয়েছে নবাগত আস্তানা। ঘরের মাঠে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে রুখে দিয়েছে গোলশূন্য ড্রতে।
ওল্ডট্রাফোর্ডে ম্যাচের ৬৬ মিনিটে অ্যান্থনি মার্শালকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেওয়াটা সমর্থকদের পছন্দ হয়নি। দুয়ো দিচ্ছিলেন তাঁরা ইউনাইটেড কোচ লুই ফন গালের সিদ্ধান্তে। অবশ্য পছন্দ হবেই বা কেন! টানা তিন ম্যাচে দল গোল পায়নি দল, দলের সেরা অস্ত্রটা অনেকদিন ধরেই ভোঁতা, এর আগে বেশ কয়েকবার কাছাকাছি গিয়েও পারেননি—এ ম্যাচেও তাই হয়তো আর গোলের কোনো সম্ভাবনা দেখছিলেন না ইউনাইটেড সমর্থকেরা। তবে দিন শেষে সমালোচনা-দুয়ো গিলেও হাসিটা সবচেয়ে চওড়া হলো তাঁদেরই, এমনকি ফন গালের হাসির চেয়েও!।
সিটি-সেভিয়া ম্যাচের একটি মুহূর্ত।৭৯ মিনিটে হেসে লিনগার্ডের ক্রসটা হেড করতেই উচ্ছ্বাসের চেয়েও যেন স্বস্তির ছোঁয়াটাই বেশি ছিল ইউনাইটেড গ্যালারিতে। অবশ্য অনেকদিন পরের এই গোলেই রেকর্ড বইয়ে রুনি। ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় ডেনিস লয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেন এই ৩০ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। কদিন আগেই ইংল্যান্ডের হয়ে ববি চার্লটনের ৪৯ গোলের রেকর্ডটা ছাড়িয়ে গেছেন। ইউনাইটেডের জার্সিতে আর ১৩ গোল হলেই এখানেও চার্লটনের ২৪৯ গোলের ছাড়িয়ে ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে যাবেন রুনি। ‘এ কার পাল্লায় পড়লাম রে বাবা’—ভাবনাটা চার্লটনকে পেয়ে বসলেও খুব বেশি অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ইউনাইটেডের স্বস্তির দিনে স্বস্তি মিলেছে ম্যানচেস্টার সিটিরও। ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ে খেলার মতো দল নয়—বদনামটা ঘুচছেই না দলটির। কখনো যে চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডটাই পেরোনো হয়নি সিটিজেনদের। তবে এবার প্রথম ম্যাচে হারের পর থেকেই বেশ দৃঢ়প্রতিজ্ঞই দেখাচ্ছে তোরে-হার্টদের। আগের ম্যাচেই ঘরের মাঠে সেভিয়াকে হারিয়েছে ২-১ গোলে, এবার সেভিয়ার মাঠে জয়টা ৩-১-এ। শুরুর ১১ মিনিটেই দুই গোল করা সিটির জয়টা হতে পারত আরও বড়ও।
ম্যাচের শুরুতেই একটা চমক দিয়েছিলেন সিটি কোচ ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনি। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্র“ইনকে বেঞ্চে বসিয়ে রেখে জায়গা দেন ফার্নান্দোকে, যাতে ফার্নান্দিনহো ও ইয়াইয়া তোরে আরও সামনে খেলতে পারেন। পরিকল্পনাটা বেশ কাজে দিয়েছে। প্রথম দুই গোলেই অবদান আছে ফার্নান্দিনহোর। প্রথমটি রাহিম স্টার্লিংকে দিয়ে করিয়েছেন, আর নিজে করেছেন পরেরটি। ২৫ মিনিটে বেঁনোয়া ট্রেমোলিনাসের গোলে সেভিয়ার ফিরে আসার স্বপ্ন ভেস্তে যায় ১১ মিনিট পর সিটি স্ট্রাইকার উইলফ্রায়েড বোনির গোলে।
ম’গ্লাডবাখের মাঠে দশ জনের দল নিয়েও ড্র করার জন্য গোলরক্ষক জিজি বুফনকে একটা ধন্যবাদ দিতে পারে জুভেন্টাস। অবশ্য ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়েছিল ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরাই। ১১ মিনিটে বরুসিয়ার ফাবিয়ান জনসনের গোলটি বিরতির আগেই ফেরত দেন স্টেফান লিখটেনস্টেইনার। বিরতির কিছু পরেই হার্নানেস লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়লেও জুভেন্টাস বেঁচে গেছে শেষ দিকে বুফনের গ্লাভসে ভর করে। তথ্যসূত্র: ইএসপিএন।