খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০১৫: দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন কমরেড নুরুল হক মেহেদী। দেশে এখন গণতন্ত্রের বড় শূন্যতা চলছে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি দৃঢ়ভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যুক্ত থেকেছেন। দেশের এ সঙ্কটময় মুহূর্তে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তার মতো একজন ত্যাগী ও সৎ নেতার আজ বড় প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশ ন্যাপ‘র আলোচনা সভায় জাতীয় নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত মন্তব্য করেছেন।
আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ট সহকর্মী, আজীবন সংগ্রামী রাজনীতিক জননেতা নুরুল হক চৌধুরী ( কমরেড মেহেদী ) স্মরণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ “স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ঃ কমরেড মেহেদী”-শীর্ষক স্বারক আলোচনায় ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি‘র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করবেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, কল্যাণ পার্টি ভাইস চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান তামান্না, জাতীয় পার্টি যুগ্ম মহাসচিব এ.এস.এম শামিম, সাবেক ছাত্রনেতা সুরঞ্জন ঘোষ, ন্যাপ যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, নগর সদস্য সচিব মোঃ শহীদুননবী ডাবলু, কেন্দ্রীয় সম্পাদক মোঃ নুরুল আমান চৌধুরী, মোঃ কামাল ভুইয়া, মতিয়ারা চৌধুরী মিনু, নগর নেতা এম.এন. শাওন সাদেকী, সোলায়মান সোহেল, আবদুল্লাহ আল-কাউছারী, জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে.এম. রাকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
শফিউল আলম প্রধান বলেছেন, কমরেড মেহেদী বাংলার মানুষের অধিকার আদায় আর মহান মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। দেশ ও জাতির কল্যাণ ছাড়া তার মাথায় অন্যকিছু ছিল না। তিনি আজীবন সংগ্রাম প্রিয় মানুষ ছিলেন। তিনি বলেন, দেশে এখন ৭২-৭৫ এর চাইতে বেশী ভয়াবহ সংকট চলছে। দেশে এখন শেখ হাসিনা ছাড়া কারো নিরাপত্তা নেই। সমগ্র জাতি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সরকার বিরোধী দলকে ধ্বংস করতে গিয়ে নিজেই ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। প্রকৃতির নিয়মইে এই ফ্যাসীবাদী সরকারের পতন অনিবার্য্য।
তিনি আরো বলেন, সরকার বিরোধী রাজনীতির কন্ঠরোধ করতে গিয়ে বিদেশীদের কাছে নিজের দেশকে জংগীবাদী রাষ্ট্র হিসাবে প্রমান করার আত্মঘাতি খেলা খেলতে গিয়ে নিজেই বিপদে ঠেলে দিয়েছে জাতিকে। সরকারের অপরাজনীতির কারণে জাতিয় সংহতি বিনষ্ট করেছে, ধর্মে-ধর্মে সংঘাত সৃষ্টি করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিনত করার চক্রান্ত করছে। সরকারের এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা বলেছেন, দেশে আজ গণতন্ত্রের কঠিন সংকট চলছে। গণতন্ত্রের জন্য, সাধারন মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কমরেড মেহেদী আজকের ও আগামী প্রজন্মের জন্য দিকপাল। তিনি বলেন, সরকার দেশে একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করছে।
এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, কমরেড মেহেদী স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বৈরাচার বিরোধী সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রথম সারীতে ছিলেন। রাজনীতিতে তিনি অনেক বড় জায়গা দখল করে রেখেছেন। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর পরবর্তী সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে তিনি ছিলেন সার্থক নেতৃত্ব। তিনি দেশে অব্যাহত হত্যাকান্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, দেশবাসীর জান-মালের নিরাপত্তা দিতে এ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। দেশে আইনের শাসনের অনুপস্থিতিতে-সমগ্র জাতি আজ এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় নিপতিত হয়ে পড়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে জেবেল রহমান গাণি বলেছেন, দেশ এখন দুঃসময় পার করছে। সংসদে কার্যত কোনো বিরোধী দল নেই। বিদেশী নাগরিক, ব্লগাররা হত্যা হচ্ছে। দেশের মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কমরেড মেহেদীর মত নেতা প্রয়োজন। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা দেশকে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশে কোনো অঘটন ঘটলে তার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় না এনে সরকার ঘটনাগুলোকে বিরোধী দলের উপর চাপিয়ে দিয়ে অপরাজনীতি করছে। সরকার বিরোদী দল দমনে অপরাজনীতি না করে যদি এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতো তাহলে দেশে হত্যা ও সন্ত্রাসের কোন ঘটনাই ঘটতনা। তিনি সরকারের দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনে যাওয়ার অতি আগ্রহকে সন্দেহ হিসাবে সমালোচনা করে বলেছেন, সরকার কি নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে কি না ভেবে দেখতে হবে।