গত বছর ২৩ অক্টোবর রাজধানীর বংশাল থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রক্রিয়ায় তাদের তলব করা হয়। তলবি নোটিশে ওবায়দুল করিমকে ৪ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় এবং বাকিদের ৫ নভেম্বর একই সময় দুদক কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। দুদক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন ও ভিজিলেন্স উপ-বিভাগের প্রতিবেদনে তৎকালীন ওরিয়েন্টাল ব্যাংক ৪৭১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং চেয়ারম্যান-পরিচালকদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে এ অর্থ স্থানান্তরের তথ্য উঠে আসে। গ্রাহকের রাখা আমানতের অর্থ ইন্টার ব্যাংকিং ডেবিট ভাউচারের (আইবিডি) মাধ্যমে তারা কৌশলে নিজেদের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেন। এ প্রক্রিয়ায় শুধু বংশাল শাখা থেকেই সরানো হয় ৪৮ কোটি টাকা। বিষয়টি দুদকে এলে অনুসন্ধানে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। পরে দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের নবাবপুর শাখা থেকে ৪৮ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। ঋণের অর্থ স্থানান্তরিত হয়েছে মো. সাহাবুদ্দিনের নামে খোলা ১৯টি ভুয়া অ্যাকাউন্টে। মামলায় ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মো. হারুন, সাবেক এভিপি মো. আলমগীর কবির, নির্বাহী কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন ভূঁইয়া, বিনিয়োগ কর্মকর্তা ফিরোজ কবিরকে আসামি করা হয়। তবে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয় ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিএম কয়েশ সামীসহ সংশ্লিষ্টদের।
অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন ও ভিজিলেন্স উপ-বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়, টাকাগুলো ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিমের ব্যক্তিগত নামে পরিচালিত একটি অ্যাকাউন্ট (হিসাব নং-৫১৬৮) এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান মেসার্স বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লি. এবং আগ্রাবাদ একম জেভি লি. নামক প্রতিষ্ঠানের চলতি ও বিনিয়োগ হিসাবে নগদ জমা হয়। বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লি. ওবায়দুল করিমের সহোদর রেজাউল করিমের প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ ওরিয়েন্টাল ব্যাংক থেকে আত্মসাৎকৃত ৪৮ কোটি টাকা ওবায়দুল করিমের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা হলেও মামলায় সেটির উল্লেখ নেই। অভিযোগ অনুসন্ধানকালে ওবায়দুল করিম এবং অপর দুই হিসাবধারীদের তলবি নোটিশও করা হয়নি। ব্যাংকটির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কয়েশ সামীর সংশ্লিষ্টতাও এড়িয়ে যাওয়া হয়। গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য এড়িয়ে দায়ের করা মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই ওবায়দুল করিমসহ সংশ্লিষ্টদের তলব করা হয়েছে।