খোলা বাজার২৪ ॥বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর ২০১৫: প্রথমবারের মতো শীতকালীন আয়কর মেলা আয়োজন করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবি আর।
আগামী ১৯ থেকে ২১ নভেম্বর রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
মেলায় করদাতারা আয়কর রিটার্ন দাখিলসহ কর সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য ও পরামর্শ পাবেন।
বুধবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) প্রকাশিত ট্যাক্স গাইড ২০১৫-১৬ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এনবি আর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান শীতকালীন আয়কর মেলা আয়োজনের তথ্য জানিয়েছেন।
ঢাকায় দুই জায়গায় এই মেলা আয়োজনের পাশাপাশি ছয়টি বিভাগীয় শহরেও (চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল ও রংপুর) তা আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।
এনবি আর চেয়ারম্যান বলেন, দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের পাশাপাশি সাধারণ করদাতারাও মেলায় আয়কর পরিশোধ করতে পারবেন।
গত কয়েক বছর ধরে সেপ্টেম্বর মাসে দেশব্যাপী আয়কর মেলা আয়োজন করে আসছে এনবি আর। এবছর রাজধানী, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে মেলা আয়োজনের পাশাপাশি উপজেলাতেও ভ্রাম্যমাণ মেলা করে এনবি আর।
১৬ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ওই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় ৭ লাখ ৫৭ হাজার করদাতা বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করেছেন। সপ্তাহব্যাপী মেলা থেকে ২ হাজার ৩৫ কোটি টাকার কর আদায় হয়।
আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রতি বছর পহেলা জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে।
তবে কাক্সিক্ষত রিটার্ন জমা না হওয়ায় প্রতিবারই এই মেয়াদ বাড়ানো হয়। এবারও দুই মাস বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমার সুযোগ রাখা হয়েছে।
যারা এখনও আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি তারা শীতকালীন মেলায় গিয়ে জমা দিতে পারবেন।
তবে ঢাকায় কোন দুই স্থানে এই মেলা হবে তা এখনও চূড়ান্ত করেনি এনবি আর।
ঢাকা চেম্বারের ট্যাক্স গাইড সম্পর্কে এনবি আর প্রধান বলেন, “কর দেওয়া বা পরিশোধ পদ্ধতি একটু কঠিন। গাইডটি কর দেওয়ার বিষয়ে বেশ সহায়তা করবে।”
সাধারণ মানুষের সুবিধায় রাজস্ব বোর্ড ‘প্রত্যক্ষ কর আইন’ ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও প্রণয়নের কাজ করছে বলে জানান তিনি।
“আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্য কাস্টম আইন-২০১৫ কে যুগোপোযোগী করা হচ্ছে এবং আগামী সংসদ অধিবেশনে তা অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।”
এনবি আর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী বছরের জুলাই থেকে ভ্যাট আইন বাস্তাবায়ন করা হবে। এর ফলে অনলাইনে ভ্যাট প্রদান সংক্রান্ত সব কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে।
শিল্প-কারখানাগুলোকে ট্যাক্স কমপ্লায়েন্সের আওতায় আনতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান নজিবুর রহমান।
ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ আয়কর দেওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে এনবি আরের পক্ষ থেকে কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ জানান।
ডিসিসিআই সহ-সভাপতি শোয়েব চৌধুরী ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় কমাতে লাইসেন্স ফি ও শুল্ক হার কমানোর অনুরোধ করেন।
ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি পর্যায়ে কর প্রদান বিষয়ে পরামর্শ দিতে প্রতি বছর বাজেটের পরপর ট্যাক্স গাইড প্রকাশ করে থাকে ডিসিসিআই।
গাইডে বিভিন্ন সিডিউল এবং এসআরওর তথ্য সন্নিবেশিত রয়েছে, যা ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইনস্যুরেন্স কোম্পানি এবং অন্যান্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে বিশেষভাবে সহায়তা করার পাশাপাশি দেশের কর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ধারণা দেয়া দেবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান, আব্দুস সালাম, খ. আতিক-ই-রাব্বানী, মোক্তার হোসেন চৌধুরী ও এনবি আরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।