খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ৭ নভেম্বর ২০১৫: ক্লাসরুম ছেড়ে ফুটপাতে ১২ দিন ধরে দিন-রাত কাটাচ্ছেন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। বিনা বেতনে চাকরি করা থেকে মুক্তি পেতে এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাতে ঘুমাচ্ছিলেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অর্ধশতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী। তাদের কয়েকজন জানালেন বেতনহীন চাকরির দুর্দশার কথা। তাদের দাবি, শিক্ষকদের ‘অভুক্ত’ রাখার যে প্রথা চলছে এতে ‘মানসম্মত’ শিক্ষা অসম্ভব।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের সংগঠন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ এশারত আলী বলেন, একদম বিনা বেতনে আমরা বছরের পর বছর চাকরি করছি। সবার প্রত্যাশা ছিল একদিন এমপিওভুক্ত হবে আমাদের প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সরকার স্বীকৃতি দিলেও আমাদের এমপিওভুক্ত করছে না।
‘বিনা বেতনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হওয়ায় এখন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও বেতন আদায় করা যায় না। ফলে আমাদের জীবন কাটছে মানবেতরভাবে’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী কেবল আশ্বাস দিচ্ছেন, তিনি নাকি টাকা পান না। তাহলে টাকা ছাড়া আমরা চলব কীভাবে? এভাবে চললে এ সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। আর এতে ২০ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সরকার বলছে মানসম্মত শিক্ষার কথা, কিন্তু শিক্ষকদের অভুক্ত রেখে মানসম্মত শিক্ষা অসম্ভব।
গত ২৬ অক্টোবর থেকে শহীদ মিনার ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। পরে চার দিন অনশন কর্মসূচীও পালন করেন তারা। বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনেই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের নিম্ন মাধ্যমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি ও মাদ্রাসার স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করা ছাড়াও যোগদানের তারিখ থেকে বয়স গণনা করা এবং নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি বা পাঠদান বন্ধ রাখার দাবিতে তাদের এ কর্মসূচি চলছে।
সংগঠনটি জানিয়েছে, দেশে সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসার সংখ্যা প্রায় আট হাজার, যেখানে কর্মরত আছেন প্রায় এক লাখ ২০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী।