খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ৭ নভেম্বর ২০১৫: টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা খুব একটা ভালো না করলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ভালো সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের চতুর্থ শতক ও সাব্বির রহমানের ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে এল্টন চিগুম্বুরার দলকে ২৭৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছে স্বাগতিকরা।
শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৭৩ রান করে বাংলাদেশ।
চোটের জন্য সৌম্য সরকারের অনুপস্থিতিতে তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করেন লিটন দাস। তবে ভালো করতে পারেননি; দ্বিতীয় ওভারে লুক জংউইয়ের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে গ্রায়েম ক্রেমারের ক্যাচে পরিণত হন এই তরুণ।
ভালো করতে পারেননি টপ অর্ডারের আরেক ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহও। টিনাশে পানিয়াঙ্গারার ভেতরে আসা একটি বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
নিজেকে গুটিয়ে রাখা তামিম ইকবালকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন নবম ওভারে ক্রিজে আসা মুশফিক। তাদের ৭০ রানের জুটিতে ২৪তম ওভারে একশ’ স্পর্শ করে বাংলাদেশের সংগ্রহ।
দলকে শতরানে পৌঁছে দিয়ে ধৈর্য্য হারিয়ে ফিরে যান তামিম। সিকান্দার রাজার বলে এগিয়ে এসে লং অন দিয়ে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে জংউইয়ের হাতে ক্যাচ দেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৬৮ বলে খেলা তামিমের ৪০ রানের ইনিংসটি গড়া ৩টি চার ও দুটি ছক্কায়।
শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু বেশিক্ষণ টেকেননি বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারও। রাজার বলে চার হাঁকানোর পরের বলেই এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব; কিন্তু দলের বিপদ বাড়িয়ে স্টাম্পড হয়ে যান তিনি।
২৮তম ওভারে ১২৩ রানে চার উইকেট হারানো বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকের দিকে। দলকে বিপদ থেকে টেনে তোলা নতুন কিছু নয় তার জন্য। হতাশ করেননি এবারও। তরুণ সাব্বিরকে নিয়ে দলকে ঠিকই লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছেন তিনি।
শুরুতে নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর চড়াও হন সাব্বির। শতকের কাছে গিয়ে মুশফিক নিজেকে একটু গুটিয়ে নিলেও তার কোনো প্রভাব পড়তে দেননি তিনি। তরুণ সঙ্গীর রানের গতি বাড়ানোর ফাঁকেই ৪৬তম ওভারে নিজের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যান মুশফিক।
ওয়ানডেতে এটি মুশফিকের চতুর্থ আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় শতক। চলতি বছর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার শতক পেলেন তিনি। এর আগে গত এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০৬ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।
সাব্বিরের রান আউটে ভাঙে তার সঙ্গে মুশফিকের ১১৯ রানের চমৎকার জুটিটি। ১৮.৫ বল স্থায়ী এই জুটি গড়ার পথেই নিজের আগের সর্বোচ্চ ৫৩ রানকে ছাড়িয়ে যান সাব্বির। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক পাওয়া এই তরুণ ফেরেন ৫৭ রানে। তার ৫৮ বলের ইনিংসটি সাজানো ৪টি চার ও দুটি ছক্কায়।
চলতি বছর খুব একটা ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পাওয়া নাসির হোসেন এগিয়ে এসে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে টাউরাই মুজারাবানির বলে চামু চিবাবার হাতে ধরা পড়েন তিনি।
নাসিরের বিদায়ের পর তুমুল করতালির মধ্যে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
প্রস্তুতি ম্যাচে মুশফিকের সঙ্গে খেলার সময় রান আউট হয়েছিলেন মাশরাফি। এবার এক রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়েছেন মুশফিক। ১০৯ বলে খেলা তার ১০৭ রানের চমৎকার ইনিংসটি ৯টি চার ও একটি ছক্কা সমৃদ্ধ।
ছয় বলের মধ্যে সাব্বির-নাসির-মুশফিকের বিদায়ের শেষের দিকে হঠাৎ করেই চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে মাশরাফি ও আরাফাত সানি দলের সংগ্রহ পৌনে তিনশ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান।
শেষ ওভারে ফিরে যাওয়ার আগে ৯ বলে ১৪ রান করেন অধিনায়ক। শেষ বলে রান আউট হওয়া আরাফাত করেন ১৫ রান।
জিম্বাবুয়ের রাজা ও মুজারাবানি দুটি করে উইকেট নেন।