খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার ৮ নভেম্বর ২০১৫: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলারকে যন্ত্রণা হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।
শনিবার আমাদের অর্থনীতির কার্যালয়ে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে মধুর যন্ত্রণা বলেছেন। কিন্তু এক সময় এই মধুর যন্ত্রণা থেকে মধু সরে যাবে, থাকবে শুধু যন্ত্রণা।
তিনি বলেন, অনেক দেশ ঘাটতির সমস্যায় থাকে। কিন্তু আমরা আছি উদ্বৃত্তের সমস্যায়। বিনিয়োগ না হলেই এমনটা হয়ে থাকে। তাই বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আকু বিল পরিশোধের জন্য যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন তা জমা রেখে এসব উদ্বৃত্ত সঞ্চয় বিনিয়োগে আনতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের সঞ্চয় বিদেশি ব্যাংকে বিনিয়োগ করা হয়। যা থেকে দশমিক ৫০ শতাংশ বা তারও কম সুদ পাওয়া যায়। তার থেকে দেশে বিনিয়োগ করলে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। সুদও দেশি পাওয়া যাবে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ব্যবসায়ীদের বিদেশি বিনিয়োগ আনার জন্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলার আনার অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে আড়াই বিলিয়ন ডলার দেশে এসেছে। তার মতে এসব বিদেশি বিনিয়োগে ঝুকি অনেক বেশি। কারণ ডলাদের দাম কমে গেলে এর ঝুকি মারাত্তক হতে পারে। আর দেশের দেশের সঞ্চয় হলে এ ঝুকির আশংকা নেই বলেও তিনি বলেন।
উল্লেখ্য, রিজার্ভের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে আট মাসেরও অধিক সময়ের আমদানি দায় পরিশোধ করা সম্ভব হবে। যা তিন মাসের থাকলেই হয়।
আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে বিনিয়োগের সেরা দেশ। তাই জাতীয় স্বার্থকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ ভাগ্যোন্নয়নে সক্রিয় হয়েছে উল্লেখ করে এ ধারাকে এগিয়ে নিতে পারস্পরিক সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, এ উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা পরিহার করতে হবে। আমরা সবাই দেশের মানুষের কল্যাণ চাই। তাই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়- এমন কোনো কর্মকাণ্ডোরোই লিপ্ত হওয়া উচিত হবে না। জাতীয় স্বার্থকে রাজনীতির উর্ধ্বে রাখতে হবে।
মাতলুব আহমাদ বলেন, ব্যাংকগুলোর ৫৭ হাজার কোটি টাকা মানুষের কাছে পরে আছে। এই টাকা তারা উঠাতে পারছে না। যার কারণে এই টাকা ব্যালেন্স করতে গিয়ে ব্যাংক মালিকরা সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। সঞ্চয়পত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র সব সময় কম থাকা উচিত। সঞ্চয়পত্রের টাকা দিয়ে যাদের পরিবার চলে তাদের সঞ্চয়পত্র রাখা উচিত। কিন্তু যাদের কোন সমস্যা নেই। শুধু শুধু সঞ্চয়পত্র খুলে ব্যাংক থেকে লাভবান হচ্ছেন তাদের সঞ্চয়পত্র বন্ধ করে দেয়া উচিত।
তিনি বলেন, দেশটি যেভাবে দ্রুত সব দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তা ধরে রাখতে হবে। আজকে আমাদের এগিয়ে যাওয়া দেখে অনেক বিদেশি রাষ্ট্র চমকে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকেই চাচ্ছে না দেশটি এভাবে এগিয়ে যাক। যে কারণে মাঝে মাঝে তাদের হস্তক্ষেপে দেশে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। জাতিসংঘতো ইতোমধ্যেই বলেছে, বাংলাদেশ ইজ এ মিরাকেল কান্ট্রি।
তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা ব্যবসা করি। আমাদের পক্ষে দেশের বিপক্ষে কারা ষড়যন্ত্র করছে তা খুঁজে বের করা মুসকিল। গণমাধ্যমকর্মীরাই পারে দেশের বিরুদ্ধে কারা ষড়যন্ত্র করছে তা খুঁজে বের করা। এখনতো গণমাধ্যম অনেক শক্তিশালী। তারা ইতোমধ্যেই অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে।