Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

73খোলা বাজার২৪ ॥বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৫: লাতিন আমেরিকার দেশগুলির মধ্যে মানবপাচারে কুখ্যাত মেক্সিকো। এই দেশটিতে বহুবার মানবপাচারের জন্য গোপন সুড়ঙ্গের হদিশ মিলেছে। মেক্সিকোয় মানবপাচারকারীরা যে কী ভীষণ নৃশংস এবং মানবপাচারের মতো সংগঠিত অপরাধে দেশটিতে নারীদের অবস্থা কতটা দুর্বিসহ, তার উদাহরণ কারলা জ্যাকিন্তো বিস্ফোরক বয়ান। হাড়হিম করা সেই বয়ানে জ্যাকিন্তো জানিয়েছেন, ৪ বছর ধরে তাঁকে ৪৩ হাজার ২০০ বার গণধর্ষণ করা হয়েছে। জ্যাকিন্তোর কথায়, ‘সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রমাগত ধর্ষিত হওয়ায় আমি যন্ত্রণায় চিৎ‍কার করে যখন কাঁদতাম, তখন কিছু লোক আমায় দেখে হাসত।’
২০০৬ সালে মেক্সিকোর তেনানসিঙ্গো শহরে মানবপাচারকারীদের ডেরা থেকে বেশ কয়েকজন তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া তরুণীদের মধ্যে ছিলেন কারলা জ্যাকিন্তোও। মাত্র ১২ বছর বয়সে তাঁকে চাকরি, উপহার ও গাড়ি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে পাচারকারীদের হাতে তুলে দেয় তাঁর এক আত্মীয়। তারপর থেকেই চলত অত্যাচার। জেসিন্তোকে বাড়ি দিয়ে আসার নাম করে নিয়ে যাওয়া হয় তেনানসিঙ্গোয়। কিন্তু বাড়ি ফেরা তো দূর, সেখানে তাঁকে দেহব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হয়।
ঈঘঘ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎ‍কারে জেসিন্তো শোনালেন তাঁর জীবনের ৪ বছরের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। বছর ২৩-এর ওই তরুণী জানিয়েছেন, পাচারকারীদের দল তাঁকে প্রতিদিন ৩০ জন পুরুষের কাছে বিক্রি করত। সেই পুরুষেরা সারারাত তাঁর দেহ ভোগ করত। জ্যাকিন্তোর কথায়, ‘সকাল ১০টা থেকে শুরু হত ধর্ষণ। চলত ভোররাত পর্যন্ত। একাধিক পুরুষ আমায় খেত। ধর্ষণ চলাকালীন আমায় চোখ বন্ধ করে থাকতে হত। নইলে জুটতো বেধড়ক মার। কারণ, ওই লোকগুলো আমার সঙ্গে যা ইচ্ছে তা-ই করত, সেই সব বিকৃত যৌনলালসা যাতে আমি দেখতে না-পাই, তাই আমায় চোখ বন্ধ রাখতে হত।’
পাচারকারীদের অত্যাচার নিয়ে জ্যাকিন্তো বলছেন, ‘একবার এক কাস্টমার আমায় ধর্ষণ করতে করতে ঘাড়ে কামড়ে দিয়েছিল। আমি এক পাচারকারীকে নালিশ করতেই, আমায় বেঁধে চেন দিয়ে পিটিয়েছিল। আমার চুলের মুঠি ধরে লাথি মেরে, মুখে থুতু দিয়েই সে ক্ষান্ত থাকেনি। একটি লোহার রড গরম করে আমার পায়ের পাতা পুড়িয়ে দেয়। আমি ভাবতাম, কেন আমি মরে যাচ্ছি না। তাহলেই তো বেঁচে যাব।’
পাচার হওয়া শিশুকন্যাদের উদ্ধার করার বদলে কিছু পুলিশ অফিসার তাদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হত বলেও জানাচ্ছেন জ্যাকিন্তো। সাক্ষাৎ‍কারে তিনি বলেছেন, ‘পাচার হওয়া ১০ থেকে ১৪ বছরের শিশুগুলিকে নগ্ন করে শরীরের নানা অংশ ছুঁয়ে দেখত ওই পুলিশ অফিসাররা।’
‘নরক’ থেকে উদ্ধার হওয়ার পর মানবপাচারের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছেন জ্যাকিন্তো। বর্তমানে তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে মানবপাচার রোধে কাজ করছেন। মানবপাচারকারীদের ধরতে পুলিশকে সাহায্যও করেন জ্যাকিন্তো। তাঁর কথায়, ‘আমি যতদিন বাঁচব, মানবপাচারকারীদের ত্রাস হয়ে বাঁচব। আমার উপল যে অত্যাচার হয়েছে, তা যেন কোনও মহিলার না হয়