Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

78খোলা বাজার২৪ ॥বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৫: ঋণ পুনর্গঠনের আওতায় দেড় হাজার কোটি টাকা পুনর্গঠন করে নিয়েছে ১০ শিল্পগ্রুপ। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো সুদ মওকুফসহ ঋণ পরিশোধে পেয়েছে অতিরিক্ত সময়। তবে প্রাপ্ত সুবিধা ও সময় যথাযথভাবে দেয়া হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে মাঠে নামছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে সব ঋণের সুদ হার মওকুফ করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ঘাটতি রয়েছে কি-না -তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর শাখা নির্বাচন করে আকষ্মিক পরির্দশনে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গোয়েন্দারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এ কার্যক্রমের আওতায় বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলো প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকগুলো থেকে কোনো অবৈধ সুযোগ নিয়েছে কি-না সেটি দেখা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সুদ মওকুফের যথার্থতা খতিয়ে দেখতে প্রাথমিকভাবে গত দেড় বছরের খাতভিত্তিক তথ্য চেয়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে চিঠি দেওয়া হয়। সব ব্যাংক এ তথ্য এখনও পাঠাতে পারেনি। তবে যাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে তার নমুনা ধরে আমরা মাঠে নেমেছি। কোনো অনিয়ম পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র এএফএম আসাদুজ্জামান বলেন, ব্যাংকগুলো পরিদর্শন ও তদারকি নিয়মিত কার্যক্রম।
জানা যায়, পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ব্যাংকগুলোকেও তথ্য চেয়ে চিঠি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-১ থেকে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে চিঠি দিয়ে এ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য দিতে বলা হয়। ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সেখানে ব্যাংকগুলো সঠিক নিয়মে সুদ মওকুফ করেছে কি-না, যাকে মওকুফ সুবিধা দেওয়া হয়েছে তিনি তা পাওয়ার যোগ্য কি-না, যথাযথ নিয়মে সুদ মওকুফের আবেদন ও ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে উত্থাপিত হয়েছে কি-না-এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে।
জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক গত জানুয়ারি মাসে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে ৫শদ কোটি টাকার বেশি ঋণ থাকলে তা পুনর্গঠনের সুযোগ দেয়া হয়। এর আওতায় বিভিন্ন ব্যাংক ১০টি শিল্প গ্রুপের প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার বড় ঋণ পুনর্গঠন করেছে। তাদের ঋণের সুদহার আগের তুলনায় কমানো হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে ঋণ পরিশোধের মেয়াদও।
ব্যাংক গ্রাহকের আবেদন বিবেচনা করে ব্যাংক এই সুযোগ দিয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত আবেদন পাঠানো হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নথি পর্যালোচনা করে এসব প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। তবে প্রস্তাব সঠিক কি-না তা তাৎক্ষণিক ভাবে দেখা সম্ভব হয়নি। তাই এবার মাঠে যাবে এর দক্ষ ও চৌকস একদল কর্মী।
সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি খাতের তিনটি ব্যাংক থেকে শিকদার গ্রুপের পক্ষে আসা এক হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা পুনর্গঠন করা হয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০টি ব্যাংকে যমুনা গ্রুপের এক হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকে এননটেক্স গ্রুপের এক হাজার ৯৪ কোটি, এস এ অয়েল রিফাইনারি ও সামানাজ গ্রুপের পক্ষে ছয় ব্যাংকের ৯২৮ কোটি টাকা, কেয়া গ্রুপের পক্ষে পাঁচ ব্যাংকের ৮৭৯ কোটি টাকা, রতনপুর গ্রুপের পক্ষে তিন ব্যাংকের ৮১২ কোটি টাকা, থার্মেক্স গ্রুপের পক্ষে জনতা ব্যাংকের ৬৬৭ কোটি টাকা, আবদুল মোনেম গ্রুপের পক্ষে চার ব্যাংকের ৫৭৭ কোটি টাকা এবং বি আর স্পিনিংয়ের পক্ষে তিন ব্যাংকের ৫৭২ কোটি টাকা পুনর্গঠন করা হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন করে দেশের বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপ। মোট ৫ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা পুনর্গঠনের আবেদন করে প্রতিষ্ঠানটি।