Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

79খোলা বাজার২৪ ॥বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৫: নির্ধারিত সময়ে নবায়ন ফি না দেওয়ায় গত অর্থবছরে লক্ষাধিক বেনিফিশিয়ারি ওনার্স বা বিও এ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
দশম সংসদের অষ্টম অধিবেশনে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা-১৫ আসনের সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী সংসদকে এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী জানান, পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার লক্ষ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিছু অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলাও করা হয়েছে।
তিনি জানান, ২০১১ সালের ২৩ জুন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়েরকৃত একটি মামলার রায় ঘোষিত হয়। আদালত মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০২ এর আওতায় সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া ছাড়াও অর্থদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর থেকে ২০ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৪ দশমিক ৮৮ সিঙ্গাপুর ডলার ফেরত আনা হয়েছে।
ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, বিনিয়োগ কমেনি বরং ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি খাতে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৫১১ দশমিক ৩ বিলিয়ন টাকা, যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৫ সালের জুন শেষে (সাময়িক তথ্য অনুযায়ী) ৪ হাজার ৩৮৪ দশমিক ৪ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। ২০১১ সালের জুনে দেশে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল জিডিপির ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে চলতি বছরের জুন শেষে জিডিপির ২৯ দশমিক ০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাংকিং খাতে তারল্য বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তারল্য উদ্ধৃত্তের পরিমাণ ২০১১ সালের জুন শেষে ছিল ৩৪০ দশমিক ৭১ বিলিয়ন টাকা। ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১২৩ দশমিক ৫১ বিলিয়ন টাকা এবং আগস্ট ২০১৫ শেষে ১ হাজার ১৬৯ দশমিক ৪২ বিলিয়ন টাকায় দাঁড়িয়েছে।’
মো. মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ব্যাংকে গচ্ছিত জনগণের আমানত আট গুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০০০-০১ অর্থবছরে ব্যাংকে গচ্ছিত জনগণের আমানতের পরিমাণ ছিল ৮১ হাজার ৬০৪ দশমিক চার কোটি টাকা, যা ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেড়ে সাত লক্ষ ৪৬ হাজার ৩০০ দশমিক দুই কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে মাথাপিছু সরকারি ঋণের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।’
মুহিবুর রহমান মানিকের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময়েই সারাদেশে কর কার্যালয়কে উপজেলা পর্যায়ে বিস্তৃত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে সারাদেশে বেশ কয়েকটি উপজেলায় কর কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।’
আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন দাতাদেশ/সংস্থার কাছ থেকে মোট ৯১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সাহায্যের কমিটমেন্ট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৬১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ এবং ২৯ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান। একই সময়ে ডিসবার্সমেন্ট হয়েছে ৬৪ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তার মধ্যে ৩৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ এবং ২৫ দশমিক ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান।’
মন্ত্রী দাতাদেশ ও সংস্থা ওয়ারী বিবরণ তুলে ধরে জানান, চীন সরকার কর্তৃক ৯টি সুদমুক্ত ঋণের সর্বমোট ৬১২দশমিক ৪০ মিলিয়ন আরএমবি সমপরিমাণ প্রায় ৯৯ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ মওকুফ করেছে। বাংলাদেশ সরকার ও জাপান সরকারের মধ্যে ১৯৯৮ সালের পূর্বে সম্পাদিত ঋণ চুক্তিসমূহের অধীনে আসল ও সুদ বাবদ প্রতি বছর বাংলাদেশ যে অর্থ পরিশোধ করে তা জাপান সরকার ফেরত প্রদানের ঘোষণা দিয়ে এর আসল ও সুদ বাবদ পরিশোধতব্য আনুমানিক ১৮,৭২৮ কোটি টাকার মধ্যে ডিবেট রিলিফ গ্রান্ট এ্যাসিসট্যান্স (ডিআরজিএ)-এর মাধ্যমে অনুদান হিসেবে প্রায় ৯,৬২৮,০০ কোটি টাকা জাপান বাংলাদেশ সরকারকে ফেরত প্রদান করে। পরবর্তী সময়ে অবশিষ্ট প্রায় ৯,১০০ কোটি টাকা জাপান ডিবেট ক্যানসেলেশন ফান্ড (জেডিসিএফ)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের সম্মত তালিকা অনুযায়ী বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন প্রকল্পে এ অর্থ ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ ১৮২ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ প্রায় ১,৪১৯ দশমিক ২৯ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বর্তমানে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১৬৯ দশমিক ০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার ১৬০ টাকা।