খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৫: অপরাধ দমনে ঢাকা মহানগরের বাসিন্দাদের তথ্য সংগ্রহে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
ঢাকা বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য পুলিশের কাছে থাকলে অপরাধী শনাক্ত করা সহজ হবে বলে মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীটির কর্মকর্তারা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বলেন, “অপরাধ দমনে মহানগরে বসবাসকারী বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে।
“আগেও এই তথ্য সংগ্রহ করা হত, কিন্তু এখন বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় বিভিন্ন সময়ে পুলিশের হাতে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা ছদ্মনামে বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। এরপর সুযোগ বুঝে অপরাধ করে বাড়ির ভাড়া না দিয়েই পালিয়ে যায়।”
তেঁজগাও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বাড়িতে এসে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করতে অনুরোধ করেছেন বলে ওই এলাকার বাড়ির মালিক ফারহান আহমেদ জানিয়েছেন।
তবে ওই কর্মকর্তা তথ্য সংগ্রহ সংক্রান্ত মহানগর পুলিশের কোনো নির্দেশনা দেখাতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, “এ সংক্রান্ত কাগজ থাকলে বিষয়টি বাড়িওয়ালাদের কাছে বেশি বিশ্বাসযোগ্য হবে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোপীবাগ এলাকার এক ভাড়াটিয়া বলেন, “তথ্য সংগ্রহের জন্য পুলিশ থেকে যে ফর্ম দেওয়া হয়েছে তাতে মহানগর পুলিশের কোনো মনোগ্রাম বা সিল নেই। এক্ষেত্রে যারা তথ্য সংগ্রহ করতে আসবেন তারা আসলেই পুলিশ কি না বা প্রকৃত অর্থেই তথ্য সংগ্রহ করছেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিতে পারে।”
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশের কর্মকর্তারা যখন তথ্য সংগ্রহ করতে যাবেন তখন তারা যেন নিজ ইউনিফর্ম পরে যান এবং নিজেদের পরিচয় দেন সে নির্দেশনা দেওয়া আছে।”
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে মহানগরের বিভিন্ন স্তরের পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে মাসিক ক্রাইম কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া নগরবাসীর তথ্য সংগ্রহের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশনা দেন বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানান।
শাহজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল মাবুদ বলেন, “বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যরা তাদের এলাকায় কারা বাড়ির মালিক, কারা ভাড়াটিয়া, কোন হোটেলে বোর্ডার কে থাকছেন, কে আসছেন, এলাকায় কোনো বিশেষ স্থাপনা আছে কি না তার খোঁজ রাখবেন।
“এছাড়া কোন এলাকায় কয়টি মাদ্রাসা আছে, সেখানের শিক্ষক কারা, কয়টি কোচিং সেন্টার আছে, সেখানে কী পড়ানো হয়, থানা এলাকায় কয়টি বস্তি আছে, সেগুলোর মালিকানা কার ও বাসিন্দা কারা এসব বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।”
থানা পুলিশের কাছে এলাকার নকশাও থাকবে।
পুলিশ সদস্যদের সংগ্রহ করা তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে বলেও জানান পরিদর্শক মাবুদ।
মাসিক ক্রাইম কনফারেন্স মহানগরে অক্টোবরে এলাকাভিত্তিক অপরাধ দমনে সফলতা পর্যালোচনা করা হয়। এতে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রথম হন।