খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৫: পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারের নির্দেশে বেসরকারি পাটকলগুলো পাটের ব্যাগ তৈরি শুরু করেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ব্যাগ তৈরির অর্ডার পাওয়া যায়নি। তাই এ আইন বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ ও হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জুট মিলস এ্যাসোসিয়েশন (বিএজএমএ)।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের সঙ্গে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ বাস্তবায়ন বিষয়ক এক বৈঠকে বৃহস্পতিবার এ হতাশার কথা জানায় বিএজএমএ। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে বিজেএমএ’র চেয়ারম্যান শামস উজ জোহা জানান, ধান, চাল, গম, চিনি, সার ও ভুট্টা পরিবহনে প্লাস্টিকের মোড়ক নিষিদ্ধ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের লক্ষ্যমাত্রানুযায়ী বেসরকারি জুটমিলগুলো ব্যাগ তৈরি শুরু করেছে। কিন্তু কোনো ধরনের ব্যাগ কেনার প্রস্তাব আসেনি। তাই এ আইন বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দিহান বেসরকারি পাটকলগুলো।
এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জ আজম বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠান এ আইন মানবে না তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি তার লাইসেন্স ও এলসি বাতিল করা হবে। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হবে। আইন না মানলে জেল-জরিমানার পাশাপাশি ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধেরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ আইন বাস্তবায়নে সরকার সক্রিয়। যেকোনো মূল্যে এ আইন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হবে। তাই সন্দেহের কিছুই নেই।’
বৈঠকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা আইন মানতে প্রস্তুত। ইতোমধ্যে সার উৎপাদকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবহন ও মোড়কীকরণে ৮০ শতাংশ পাটজাত পণ্য ব্যবহার করছে। আগামীতে এটা শতভাগ করা হবে। তবে শতভাগ পাটের বস্তা ব্যবহার করলে খরচ বাড়তে পারে। এতে সারের দামে প্রভাব পড়বে। এ জন্য ভর্তুকি একটু বেশি দিতে হবে।’
সূত্রে জানা যায়, ১ ডিসেম্বর থেকে ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি এ ছয়টি পণ্যের মোড়কীকরণে প্রাথমিকভাবে চার কোটি বস্তা নির্ধারণ করেছে সরকার। এর মধ্যে সরকারি মিলগুলো দেবে তিন কোটি আর বেসরকারি মিলগুলো দেবে ১ কোটি। প্রতিটি বস্তার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে হেসিয়ান (৩৬০ গ্রাম) ৫০ টাকা এবং সেকিং (৭০০ গ্রাম) ৭২ টাকা।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যন, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যান, পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, চিনি ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ ম্যানুফ্যাকচারিং এ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।