খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৫: ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলায় দেড় শতাধিক নিহত হয়েছেন। নগরের কমপক্ষে ছটি স্থানে ভয়াবহ এসব হামলায় আরও কয়েক শ আহত হয়েছেন।
সিএনএনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।
আজ শনিবার বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে, এ হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে দেশটির সকল সীমান্ত বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি ১৫০০ সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে। আর নাগরিকদের ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় এসব সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। প্যারিস সিটি হলের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই হামলার ঘটনায় শহরের কেন্দ্রস্থলে বাটাক্লঁ কনসার্ট হলেই অন্তত ১০০ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
কনসার্ট দেখতে ওই হলে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। এরই মধ্যে অন্তত তিন হামলাকারী হলে ঢুকে কালাশনিকভের মতো দেখতে রাইফেল নিয়ে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান।
পরে হামলাকারীরা ওই হলে অনেককে জিম্মি করলে পুলিশ ভারী অস্ত্রসহ সেখানে অভিযান চালায়। এতে তিন হামলাকারী নিহত হয়েছে বলে আল জাজিরার খবরে জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শহরে একটি কম্বোডিয়ার রেস্তোরাঁয় এক বন্দুকধারী কালাশনিকভ রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এতে কমপক্ষে ১৪ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন।
একজন সাংবাদিকের উদ্ধৃতি দিয়ে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তারা অন্ধের মতো গুলি চালাচ্ছিল। যে যেদিকে পারে দৌড়ে বাঁচার চেষ্টা করছিল। আমি বহু মানুষকে গুলি খেয়ে পড়ে যেতে দেখেছি।’
অন্য হামলাগুলো হয়েছে স্তাদে দে ফ্রান্স এবং কয়েকটি বার ও রেস্তোরাঁয়। এর মধ্যে স্টেডিয়ামের কাছের ঘটনাটি আত্মঘাতী হামলা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা পর্যন্ত বিবিসি এ সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ১২০ জন এবং সিএনএন ১৫০ জনেরও বেশি নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এই হামলার নিন্দা জানিয়ে হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফ্রান্সের পাশে থাকার কথা বলেছে ন্যাটো।
যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্সকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
প্যারিসে এই সন্ত্রাসী হামলার ভয়াবহতায় ক্ষুব্ধ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এক টুইটে বলেছেন সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা নিয়ে তাঁরা ফ্রান্সের মানুষের পাশে থাকবেন।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেছেন, প্যারিসে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তিনি বিস্মিত, হতবাক।