খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৫: জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের টেংরারটেক থেকে শনিবার সকালে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ হালিমা বেগম জরিনার (৩৫) ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে।
নিহত হালিমা বেগম জরিনা ওই এলাকার রশিদ পাটোয়ারীর মেয়ে। তিনি স্থানীয় ভুলতা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া তিনি উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী হিসেবে পরিচিত।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৮ বছর আগে হালিমা বেগম জরিনার সঙ্গে চাঁদপুরের আনোয়ার হোসেন নামে এক প্রবাসীর বিয়ে হয়। ওই সংসারে হৃদয় (১৫) নামে একটি ছেলে রয়েছে। বেশ কয়েক মাস আগে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে হালিমা বেগম জরিনার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পর তিন মাস আগে উপজেলার হাটাবো টেকপাড়ার জমির দালাল বিবাহিত নূর মোহাম্মদের (৪০) সঙ্গে হালিমা বেগম জরিনার ফের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জমি নিয়ে হালিমা বেগমের সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামী নূর মোহাম্মদ ও তার লোকজনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে পরিবারের ধারণা।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম জানান, সকালে নিজ বাড়ির পাশে একটি জমিতে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী হালিমা বেগম জরিনার ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে থাকতে দেখে পরিবারসহ স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত হালিমা বেগম জরিনার বাবা রশিদ পাটোয়ারী জানান, শুক্রবার রাত ৯টায় নূর মোহাম্মদ নূরু তার তিন বন্ধুকে নিয়ে তার বাড়িতে আসে। এ সময় হালিমা বেগম জরিনার সঙ্গে নূর মোহাম্মদসহ ওই তিন বন্ধুর বাকবিতণ্ডা হয়। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে রশিদ পাটোয়ারী এগিয়ে এলে তাকে চলে যেতে বলা হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডার ফলে রশিদ পাটোয়ারী ওই স্থান ত্যাগ করে ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে মেয়েকে ঘরে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে দেখতে পান একটি জমিতে হালিমা বেগম জরিনার ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে আছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক), উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা গাজী, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল মতিনসহ আওয়ামী লীগের নেতারা।
ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম জানান, ঘাতকরা জরিনাকে অন্য কোথাও মেরে এখানে ফেলে রেখেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে লাশটির পাশে পড়ে থাকা একটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে হালিমা বেগম জরিনার স্বামী নূর মোহাম্মদ পলাতক রয়েছে। অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।