Tue. May 6th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

68খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৫: রাশিয়া বিশ্বকাপ। ৩২ বছর বয়সী লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ। কী হবে, য​দি সেই বিশ্বকাপে মেসিকেই না দেখা যায়? কী হবে, য​দি সেই বিশ্বকাপে জায়গা না পায় আর্জেন্টিনা!
আর্জেন্টিনার সমর্থকদের জন্য একটা দুঃসংবাদ আছে। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে প্রথম তিন ম্যাচের একটিতেও জেতেনি এমন কোনো দলই চূড়ান্ত পর্বে যেতে পারেনি শেষ পর্যন্ত! দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাই পর্ব অনেক লম্বা একটি রেস। ২০টি দল পরস্পর হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিক দুটি করে ম্যাচ খেলে। সব মিলিয়ে ১৮ ম্যাচের লম্বা সফর। তাই তিন ম্যাচ দেখেই রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে দেখতে না-পাওয়ার হাহাকার এখনই করা বাতুলতা।
কিন্তু অতীত পরিসংখ্যান কিংবা রেকর্ড তো আর এমনি গড়ে ওঠে না। একটা ধারণা তো দেয়​ই। আর্জেন্টিনা হয়তো শেষ পর্যন্ত শুরুর এই ধাক্কা ঠিকই সামলে উঠবে। অন্তত তাদের সমর্থকদের প্রার্থনা থাকবে এমনই। কিন্তু তাতে এই সত্য মিথ্যা হয়ে যাবে না, নিজেদের বিশ্বকাপের ইতিহাসেই আর্জেন্টিনা বাছাই পর্বে সবচেয়ে জঘন্য যাত্রা শুরু করল এবারই।
১৯৭০ বিশ্বকাপের পর থেকে প্রতিটি টুর্নামেন্টে খেলেছে আর্জেন্টিনা। টানা ১১টি আসরে দেখা গেছে আকাশি-সাদাদের। মজার ব্যাপার হলো, যে ১৯৭০ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে তারা বাদ পড়েছিল, সেবারও প্রথম তিন ম্যাচে এত খারাপ শুরু তারা করেনি। প্রথম দুটো ম্যাচে হার দিয়ে শুরু করলেও তৃতীয় ম্যাচটি তারা জিতেছিল। আর এবার তিন ম্যাচে একটিও না-জেতা আর্জেন্টিনা সম্ভাব্য নয় পয়েন্ট থেকে পকেটে পুরেছে মাত্র দুটি। দশ দলের মধ্যে পয়েন্ট টেবিলে আর্জে​ন্টিনা শেষ থেকে দ্বিতীয়—নয় নম্বরে!
মজার ব্যাপার হলো, পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ইকুয়েডর। এবারের বাছাই পর্বে একমাত্র তারাই তিন ম্যাচের সবগুলো জিতেছে। অথচ সেই ইকুয়েডর বিশ্বকাপ খেলেছেই মাত্র তিনবার। এখান থেকে পেতে পারেন আরেকটি বার্তা, দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ফুটবলে মানচিত্র বদলাচ্ছে। যে ছবিটা খুব ভালোভাবে বোঝা গেছে গত কোপা আমেরিকায়। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল-উরুগুয়ের মতো তিন ঐতিহ্যবাহী শক্তির সঙ্গে ব্যবধান অনেক কমিয়ে এনেছে কলম্বিয়া-ভেনেজুয়েলা-প্যারাগুয়ে-চিলি​। এর মধ্যে ইকুয়েডরের উত্থান। গতবার যারা উরুগুয়েকেও পাঁচে ঠেলে সরাসরি জায়গা করে নিয়েছিল বিশ্বকাপে।
দশ দলের মধ্যে আট দলই এখন চারটি জায়গার জন্য মরিয়া লড়াই করে। আর্জে​ন্টিনার জন্য কাজটা সহজ হবে না মোটেও। এমনই কোণঠাসা অবস্থায় আর্জেন্টিনা পরের ম্যাচটি খেলতে যাবে কলম্বিয়ায়, বাছাই পর্বে যে দেশে সর্বশেষ তিন ম্যাচের মাত্র একটিতে জিতেছে আর্জেন্টিনা। বাছাই পর্বে প্রথম চার ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে জয়শূন্য দেখার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারেন!
হতাশার মধ্যেও আশার কথা শোনানো যাক। গতবারও কিন্তু বাছাই পর্বের শুরুটা ভালো হয়নি আর্জেন্টিনার। প্রথম তিন ম্যাচের মাত্র একটিতে জেতা দলটি শেষ পর্যন্ত চলে গিয়েছিল বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত। আর ২০১০ সালের বাছাই পর্বে টানা তিন ম্যাচ জয় দিয়ে শুরু করা আর্জেন্টিনা মাঝখানে টানা সাত ম্যাচে জিতেছিল মাত্র একটিতে! টানা ১৩ ম্যাচের রাউন্ডে আর্জেন্টিনা জয় পায়নি এমন ম্যাচই ছিল দশটি!
ভালো শুরু মানেই তাই শেষ পরিণতিও ভালো কিছু নয়। খারাপ শুরু মানেও নয় খারাপ কিছু!