Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

80খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৫: প্রকৃতিতে ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে শীতের আবহ। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া মানুষের শরীরে ফেলে বিরূপ প্রভাব। আর শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় ঠোঁটের ত্বক স্পর্শকাতর। পাতলা ও নরম হওয়ায় শীতে এর সুরক্ষায় প্রয়োজন বাড়তি যতœ। কারণ শীত মানেই ঠোঁটের শুকিয়ে যাওয়া, বাতাসে টান ধরার সাথে সাথে ঠোঁটের আর্দ্রতা কমে যাওয়া, শুষ্ক হয়ে ফেটে গিয়ে চামড়া ওঠা। এ অস্বস্তি থেকে রক্ষা পেতে এবং ঠোঁটের গোলাপী আভা ধরে রাখতে নিয়মিত ঠোঁটের যতœ নিতে হবে। অন্যথায় মুখের সবচেয়ে কোমল, সুন্দর আর আকর্ষণীয় স্থানটি হয়ে উঠবে দৃষ্টিকটু ও রুক্ষ।
ঠোঁটে শীতের প্রভাব কতটা তা আশপাশে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজানো দেখেই বুঝতে পারবেন। ঠোঁটের শুষ্কতা কমিয়ে আর্দ্রতা ধরে রাখতে হয়তো আপনিও একই কাজ করেন, কিন্তু এতে ঠোঁট আরও শুকায়, কালো হয়। সেজন্য ঠোঁটকে সুন্দর ও মসৃণ রাখতে সাথে পেট্রোলিয়াম জেলি, গ্লিসারিন, চ্যাপস্টিক বা তৈলাক্ত মায়েশ্চারাইজার রাখতে পারেন। তবে এ সব প্রসাধনী মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের হলে ঠোঁটের ক্ষতি করবে।
সময়মত ঠোঁটের যতœ না নিলে চামড়া ফাঁটতে শুরু করে। তা দূর করতে অনেকে আবার দাঁত, নখ দিয়ে চামড়া তোলেন। এতে আপনার ঠোঁটে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। তাই এ অভ্যাস পরিহার করে ব্রাশ করার সময় ভেজা ঠোঁট হালকা করে ঘষে নিতে পারেন।
তবে বেশি মরা চামড়া থাকলে রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে নিন। সকালে নরম-পাতলা কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে ঠোঁটে ঘষে মরা চামড়া তুলে ফেলুন। এ ছাড়া চালের গুড়া পানিতে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে ঘষলেও এ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু কোনভাবেই ঠোঁটে যেনো আঁচড় না পড়ে। কারণ শীতে ঠোঁটে কোনো ধরনের ক্ষত মানেই আপনার ভোগান্তি।
মেয়েদের ক্ষেত্রে শুষ্কতার কারণে অনেকের ঠোঁটে ঠিকমত লিপস্টিক বসতে চায় না। তারা লিপস্টিক ব্যবহারের আগে লোশন ব্যবহার করে টিস্যু দিয়ে মুছে নিতে পারেন।
ঠোঁট শুকনো থাকলে রোদে তা কালো হয়ে যায়। তাই শীতের দিনে যারা রোদে খেলাধুলা করেন তারা ঠোঁটে সানস্ক্রিন লাগাতে পারেন। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ঠোঁটে গ্লিসারিন লাগিয়ে সকালে ধুয়ে নিলে ঠোঁটের শুষ্কতা ও কালচে রঙ মিলিয়ে যাবে।
এ ছাড়া ঠোঁটে শসার রস লাগালে বা পাকা টমেটো ঘষলে কিংবা গোলাপের পাঁপড়ি ও গ্লিসারিন মিশিয়ে লাগালে অথবা শোবার আগে লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে লাগালে ঠোঁটের কালচে ভাব দূর হয়।
ঠাণ্ডা, অতিরিক্ত লিপস্টিক, অতিরিক্ত চা-কফি-ধূমপান ঠোঁটের ক্ষতি করে, ঠোঁটকে করে কালচে। শীতে ঠোঁটের ত্বক স্বাভাবিকত্ব হারিয়ে লাবণ্যহীন ও নিষ্প্রাণ, পানিশূন্য হয়ে পড়ে। রক্তপড়ার পাশাপাশি কথা বলতে সমস্যা হয়। সেজন্য ভিটামিন ‘বি’ সমৃদ্ধ শাক-সবজি, প্রচুর পানি, ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত ফল, স্নেহজাতীয় খাদ্য খেতে হবে। যা ঠোঁটের সুরক্ষা ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়ক।
গ্লিসারিন, অলিভ অয়েল, মধু, গোলাপজল একত্রে লাগালে বা মুলতানি মাটি, মধু ও কাঁচা দুধ মিশিয়ে লাগালে কালচে ভাব দূর হয়ে ঠোঁটে উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। দুধ-মালাই দিয়ে ঠোঁটে আলতোভাবে ম্যাসাজ করলে রক্ত চলাচল বাড়ে, যা ঠোঁটকে ঠাণ্ডা মোকাবিলায় প্রস্তুত করে। এ ছাড়া গ্লিসারিন ও লেবুর রস মিশিয়ে লাগালে ঠোঁট ফাটা বন্ধ হয়।
গোলাপ ফুলের পাতা, মধু ও দুধের সর মিশিয়ে ঠোঁটে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেললে ঠোঁট নরম ও আকর্ষণীয় হয়। এক্ষেত্রে বাদাম বাটা ও দুধের সর একত্রে লাগালে কিংবা মাখন লাগালেও উপকার পাওয়া যাবে।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঠোঁটে ভাল করে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম কিংবা প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ শসার রস বা লেবুতে চিনি মিশিয়ে লাগাতে পারেন। এ ছাড়া লেবুর রসের সাথে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে ঠোঁটে কিছুক্ষণ রেখে পানি দিয়ে ঠোঁট ধুয়ে নিন। এতে ঠোঁটের রং হবে উজ্জ্বল।
এরপরও ঠোঁটে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। কারণ শীতে ঠোঁটকে অবহেলা করলে আপনার চেহারায়ও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কথা বলতে সমস্যা হবে, হাসতে সমস্যা হবে, দেখতে খারাপ লাগবে। তাই শীতে অন্তত ঠোঁটের যতœ নিন।