খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৫: হামলাকারীরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে হামলা চালায় বলে ধারণা করছেন তদন্তকারীরা।
প্যারিসের পাবলিক প্রসিকিউটর ফ্রাঁসোয়া মলিয়েঁ শনিবার এ তথ্য জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “তারা (হামলাকারী) কোথা থেকে এসেছে এবং কিভাবে অর্থ পেয়েছে তা আমাদের বের করতে হবে।”
শুক্রবার রাতের ওই হামলায় ১২৯ জন নিহত এবং সাড়ে তিনশ’র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে তার বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
হামলার জন্য মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসকে দায়ী করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে আইএসের ‘মিডিয়া গ্রুপ’ আল হায়াত মিডিয়া সেন্টারের একটি বার্তা এসেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
মলিয়েঁ বলেছেন, সাতজন হামলাকারী নিহত হয়েছেন। তাদের সবার কাছে ভারী অস্ত্র-শস্ত্র ছিল এবং প্রত্যেকে বিস্ফোরকভর্তি বেল্ট পরেছিলেন।
সন্ধ্যার পরপর প্যারিসের প্রাণকেন্দ্রের একটি কনসার্ট হল, একটি স্টেডিয়াম, রেস্তোরাঁ ও বারে এ হামলা হয়।
এই হামলায় জড়িত অভিযোগে শনিবার প্রতিবেশী দেশ বেলজিয়ামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মলিয়েঁ জানিয়েছেন।
বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল বলেছেন, ব্রাসেলসের কাছ থেকে আটক তিনজনের একজন শুক্রবার সন্ধ্যায় প্যারিসে ছিলেন।
রাতে প্যারিসের লে ক্যারিলন রেস্তোরাঁয়ও হামলা হয়; সকালে সেখানে ফুল ও মোমবাতি দেখা যায়। হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন চলছে বিশ্বজুড়ে। রাতে প্যারিসের লে ক্যারিলন রেস্তোরাঁয়ও হামলা হয়; সকালে সেখানে ফুল ও মোমবাতি দেখা যায়। হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন চলছে বিশ্বজুড়ে। শনিবার সন্ধ্যায় প্যারিসে মলিয়েঁ সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্তের এ পর্যায়ে আমরা বলতে পারি, জঘন্য এই কাজে সম্ভবত সন্ত্রাসীদের তিনটি দল ছিল, যারা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে হামলা চালিয়েছে।”
নিহত হামলাকারীদের মধ্যে একজন ফরাসি নাগরিক বলে শনাক্ত হয়েছে। ৩০ বছর বয়সী ওই ফরাসির অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড থাকলেও কখনো তিনি কারাগারে থাকেননি।
প্যারিসের ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমের একটি শহরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি মৌলবাদের দিকে ঝুঁকছিলেন বলে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে। তবে কথনো তিনি এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হননি।
প্রসিকিউটর মলিয়েঁ বলেন, সাত জঙ্গির সবাই কালাশনিকভ রাইফেল ব্যবহার করেছেন এবং তাদের সবার একই ধরনের বিস্ফোরকভর্তি বেল্ট ছিল।
তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্তে দুটি গাড়ির ওপর বিশেষ নজর দিচ্ছে পুলিশ। সেগুলোর মধ্যে কালো রংয়ের একটি গাড়ি দুই জায়গায় ব্যবহার করে বন্দুকধারীরা। এই গাড়িটি এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
অন্য গাড়িটি হামলার পর বাতাক্লাঁকনসার্ট হল এলাকায় পাওয়া গেছে। কালো ভক্সওয়াগন পোলো গাড়িটিতে বেলজিয়ান নিবন্ধন প্লেটস রয়েছে।
মলিয়েঁ বলেন, বেলজিয়ামে বসবাসরত এক ফরাসি গাড়িটি ভাড়া করেছিলেন। শুক্রবার সকালে অন্য দুজনকে নিয়ে বেলজিয়ান সীমান্ত পেরোনোর সময় পুলিশের একটি চৌকিতে তার পরিচয় পাওয়া যায়।