খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৫: সড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে রাজশাহীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পরিবহন ধর্মঘট চলছে। আজ রোববার ভোর ছয়টা থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটের কারণে সাধারণ যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
গতকাল শনিবার রাজশাহী জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে তারা এই কর্মসূচি দেয়।
সকালে নগরের শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহীর বাইরে বিশেষ করে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা যাত্রীরা বাস না পেয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। আজ বিকেলে ঢাকায় যাওয়ার কোনো ট্রেন না থাকার কারণে এই দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা থেকে স্ত্রী, ছেলের বউ ও একটি শিশুসন্তান নিয়ে সকালে এই টার্মিনালে এসেছেন আবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি । ঢাকায় তাঁর ছেলের বাসায় যাওয়ার কথা। সঙ্গে মালামালের দুটি বস্তা ও দুটি ব্যাগ। এগুলো একটি বাস কাউন্টারের সামনে রেখে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছেন তাঁরা।
আবুল হোসেন বলেন, নওগাঁ থেকে একটি থ্রি-হুইলার ভাড়া করে রাজশাহীতে এসে শুনেছেন গাড়ি যাবে না। তিনি বলেন, গতকাল তার ছেলে ফোনে জানিয়েছেন ঢাকায় ধর্মঘট নেই। রাজশাহীতে যে আলাদা ধর্মঘট ডাকা হয়েছে এটা তাঁরা বুঝতে পারেননি।
টার্মিনালে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে ইসমাইল হোসেন নামে ঝিনাইদহের একজনকে। তিনি থাকেন ঢাকায়। রাজশাহীতে একজন চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত আসতে হয় তাঁকে। গতকাল তিনি এসেছিলেন। ঢাকায় যাওয়ার জন্য এসেছেন সকালেই।
কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে এসেছেন মোহনা খাতুন। টার্মিনালে এসে আবার ফিরে যান বাস না পেয়ে। তিনি বলেন, আগামীকাল (সোমবার) তার ভর্তি পরীক্ষা। কাল গিয়ে পরীক্ষা ধরতে পারবেন না– এই জন্য সকালে বের হয়েছেন। এখন বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। বিকেলের ট্রেনে উঠতে পারলে পরীক্ষা দিতে পারবেন। ভিড় থাকলে আর যাওয়াই হবে না।
এদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন, তারা প্রশাসনকে বারবার চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। বরং সড়কে সম্প্রতি আরও বেপরোয়াভাবে অবৈধভাবে ও নিবনন্ধনহীন যান চলাচল বাড়ছে। সড়কে অবৈধ যান চলাচলের ফলে বাস মালিক-শ্রমিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনাও বেড়েছে। এর প্রতিবাদে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত রাজশাহী জেলায় পরিবহণ ধর্মঘট চলতে থাকবে বলে কর্মসূচিতে বলা হয়।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রাস্তাঘাটে অবৈধ যানবাহন চলছে এটা সত্য; তবে সপ্তাহে শুক্রবার বাদ দিয়ে সব দিনই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতও বসছে।
যারা এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে, তাদের সঙ্গে কোনো আলাপ আলোচনা হয়নি বলেও জানান তিনি।