Thu. Jun 19th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

70খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৫ : রাজধানীর উত্তরায় শীর্ষ ফুটপাত চাদাঁবাজ ইসমাইল ওরফে চান্দা জুয়েল এর নকল সিগারেটের ব্যবসা এখন জমজমাট। মোবাইল চোরের সরদার ও ছিনতাইকৃত মোবাইল এর অন্যতম ক্রেতা ইসমাইল প্রশাসনের ছত্রছায়ায় চালাচ্ছে নানা নামীদামী ব্র্যান্ডের নকল সিগারেট।
দেশের বিভিন্ন জেলায় গড়ে উঠা নকল সিগারেটের কারখানা ও জিঞ্জিরা থেকে আমদানীকৃত নকল সিগারেট বিদেশী ও দেশী সিগারেটের মোড়কে ইসমাইল ছড়িয়ে দিচ্ছে উত্তরা সহ বিভিন্ন জেলায়। এতে করে ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারন ক্রেতা। গত ৭/৮ মাস পূর্বে ডিবি পুলিশ উত্তরার সিগারেটের দোকান ও গোডাউনে তল্লাশী চালিয়ে বিপুল পরিমান নকল বেনসন,গোল্ডলিফ,স্টার সিগারেট সহ ইসমাইল এর তিন সহযোগী জসিম, আকবর, নসুমিয়াকে আটক করে নিয়ে যায়।
অভিযোগ আছে এই ঘটনাটি পড়ে ৪ লাখ টাকা দিয়ে দফারফা করে এই চাঁদাবাজ ইসমাইল। উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ নকল সিগারেট সহ ইসমাইলকে আটক করলে তাও ধামাচাপা পড়ে যায় অঙ্গ্যাত কারনে। প্রায় প্রতি সপ্তাহে গভীর রাতে সাদা রং এর নোয়া গাড়ী দিয়ে নকল সিগারেটের বড় চালান আসে উত্তরা ৯ নং সেক্টরে ইসমাইলের ভাড়া করা আকবরের গোডাউনে। তাছাড়া গাজীপুরের বাস্তহারা নকল সিগারেটের গোডাউন নিয়ন্ত্রন করছে তার আপন ভাই সোহেল। এসব গোডাউনে সিগারেট আসার পরে তা ছড়িয়ে দেয়া হয় উত্তরা ও টঙ্গি সহ আশপাশের এলাকার সিগারেটের দোকানগুলোতে।
২০১১ সালের সেলিম হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামী হচ্ছে এই ইসমাইল। হত্যা মামলা নং:-(০৯,০৩/০২/২০১১) সি আর ১৫৫৯। এখনো মামলাটি চলমান রয়েছে। মামলাটির কারনে এই চাঁদাবাজ ইসমাইল ২বার জেল খেটে জামিনে এসে আবারও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছে। হত্যা মামলাটি তদন্তে ছিলেন বর্তমান গুলশান থানার ওসি তদন্ত এসআই সালাউদ্দিন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলামের বড় ছেলে ছিল নিহত সেলিম।
নিহত সেলিম এর পিতা কান্না জড়জড়িত কষ্ঠে বলেন আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও আমার ছেলের হত্যা কান্ডের বিচার পাচ্ছি না। হত্যাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার নাতি অরন্য আজ কতটা দিন বাবা বলে ডাকতে পারে না। নিষ্পাপ শিশুটাকে যারা এতিম করে দিল আমি তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছি।
শুধু তাই নয় এই ইসমাইল প্রশাসনের দাপটে উত্তরা হাউজবিল্ডিং এর উজ্জল নামের এক নিরীহ হকারের মাথা ফাটিয়ে উত্তরা ছাড়া করে তার সিগারেটের দোকান জোর পূর্বক দখল করে বর্তমানে নকল সিগারেটের ব্যবসা করছে “োরছে। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় উজ্জল বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে যা এখনো চলমান রয়েছে। এ মামলার তদন্তে আছেন উত্তরা পূর্ব থানার এসআই সেলিম।
অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে আসা আব্দুর রহিম এর দুই ছেলে বর্তমানে হাউজবিল্ডিং এর লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত মো: রশিদ (২২) ওরফে বাদাম রশিদ ও তার ছোট ভাই শফিক (১৫) কে ইসমাইল তার চাঁদাবাজির কাজে সহযোগী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তারা সকলের চোঁখকে আড়াল করে চাঁদার টাকা উঠানোর কৌশল হিসেবে ভাসমান বাদামের দোকান নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এবং প্রতি দোকান থেকে পুলিশের কথা বলে ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে ইসমাইলের নিকট জমা দিচ্ছে। এছাড়া ইসমাইলের আরেক সহযোগী বন্ধু চাঁদাবাজ রুহুল ওরফে ডিস্টিক রুহুল ও কাইল্লা সুমন দোকান প্রতি ২৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন ।
এ ব্যাপারে চাঁদাবাজ রুহুল চাঁদাবাজির কথা মুঠো-ফোনে স্বিকার করে এই প্রতিবেদককে বলেন, ভাই আমি প্রতি দোকান থেকে ২৫০ টাকা করে প্রায় ৭৬/১০০ টা দোকান থেকে চাঁদার টাকা উঠাই। ফুটপাতে ব্যবসা করতে হলে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই আমাদের চলতে হয়।
দুলাল নামের আরেক চাঁদাবাজ চাঁদার টাকা উঠাতে উঠাতে বর্তমানে সে তুরাগ থানা এলাকাতে ডুকে পড়েছেন। তার চাঁদাবাজির ধরনটা আবার একটু ভিন্ন। সে নিজে চাঁদার টাকা না তুলে আরেক জন ফুটপাত ব্যবসায়ীকে দিয়ে টাকা তুলে নিজের পকেট ভরছেন।
একটি সুত্র জানায়, ১৫ বছর পূর্বে উত্তরায় আসা এই ইসমাইলের গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার কমলনগর গ্রামে। প্রথম অবস্থায় হাউজবিল্ডিং এ সিগারেট বিক্রি করলেও টিএসআই বিপুল নাহার এর নামে চাঁদার টাকা উঠানো থেকে শুরু করে আজ ২০১৫ সালে সে উত্তরার র্শীষ চাঁদাবাজ। বর্তমানে এই চাঁদাবাজ ইসমাইল এর নিজস্ব শুধু ফুটপাতেই নকল সিগারেটের অবৈধ দোকান রয়েছে ৫টি। উত্তরা হাউজবিল্ডিং নর্থ টাওয়ারের সামনে একটা। যা চালাচ্ছে ইসমাইলের ভগ্নিপতি আব্বাস।
কিং সুইটস এর সামনে সিগারেটের দোকান চালায় তার ভাগিনা। উত্তরা হাউজবিল্ডিং এর ব্রিজের দক্ষিন পাশের সিগারেটের দোকান চালায় তার কর্মচারী। এছাড়াও তার রয়েছে একাধীক দোকান।
এ ব্যাপারে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে চাঁদাবাজির কথা অস্বিকার করে ইসমাইল জানান, ভাই আমি বিদেশী সিগারেট বিক্রি করি কিন্তু আমার কোন নকল সিগারেটের কোন গোডাউন নাই।