খোলা বাজার২৪ ॥মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটের পেছনের ডরমেটরি থেকে চিকিৎসক তানজিলা আক্তার মিথিলার (২৬) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় নিহতের মামা খন্দকার শরীফ উদ্দিন সোমবার দুপুরে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছেন। লাশের ময়নাতদন্ত শেষ হলেও পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ভিসেরা পরীক্ষাও করা হবে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, নিহতের মামা খন্দকার শরীফ উদ্দিন সোমবার ডা. মিজানুর রহমানকে (৩৬) আসামী করে একটি মামলা (মামলা নম্বর-২১) করেন। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে এ মামলাটি করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।
মিথিলার মামা খন্দকার শরীফ উদ্দিন বলেন, মিথিলা বাংলাদেশ মেডিকেল থেকে ইন্টার্ন শেষ করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মিজানের সঙ্গে ১১ মাস আগে তার বিয়ে হয়। মিথিলা কুমিল্লা সদর উপজেলার কান্দিরপাড় গ্রামের মো. ফিরোজ আহমেদের মেয়ে।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন ধরে মিথিলার কোন খোঁজ নিতে পারিনি। মৃত্যুর আগে সে তার ডায়রিতে লিখে গেছে- আমার জন্য কারও অসুখী হওয়ার দরকার নাই।
মিথিলার এমন আকস্মিক মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান তার পরিবার। তার শোকাহত মা রোকেয়া বেগম ক্রন্দনরত অবস্থায় তার মেয়েজামাই ডা. মিজানের (ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত) উদ্দেশে বলছিলেন, ‘তুমি এখন পুরোপুরি স্বাধীন। তুমি মনের সুখে স্বাচিপের নির্বাচন কর। কেউ তোমাকে বাধা দিবে না। কিন্তু আমি তো একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’
এদিকে, সোমবার সকালে বুকে ব্যথা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন ডা. মিজানুর রহমান। কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সুরতহাল প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা বলেন, লাশের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ২০১৪ সালের মে মাসে ডা. মিজানুর রহমানের সঙ্গে তানজিলা আক্তার মিথিলার বিয়ে হয়। বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনে অসুখী থাকার কারণে স্বামীর প্ররোচনায় মিথিলা গলায় ফাঁস দেন।
মিথিলার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী মো. আবু সামা। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারপরও পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য মহাখালীতে নমুনা পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, শাহবাগ থানা পুলিশ খবর পেয়ে রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় রুমের দরজা ভেঙ্গে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, আপাতত মৃতদেহ দেখে মনে হয়েছে আত্মহত্যার ঘটনা বিকেল (রবিবার) ৪-৫টার মধ্যে ঘটেছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা সম্ভব হবে।